দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে চলা অতিমারীরর জেরে বেসামাল দেশের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। কাজ হারিয়ে, সঞ্চয় তলানিতে ঠেকেছে অনেকেরই। তাই সঞ্চয়ের গুরুত্ব এখন আর কাউকে আলাদা করে বোঝাতে হয় না।
দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ সুনিশ্চিত ও সুরক্ষিত আয়ের উৎস হিসাবে Fixed Deposit বা স্থায়ী আমানতের উপর ভরসা রাখেন। অনেকেরই ধারণা, দীর্ঘ সময়ের জন্য ফিক্সড ডিপোজিট করলে বেশি সুদ পাওয়া যায়। তবে ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা জমিয়ে আদৌ কোনও সুদ পাচ্ছেন কি? আদৌ কি বাড়ছে আপনার সঞ্চয়ের পরিমাণ? জেনে নিন...
বর্তমানে ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা জমিয়ে তেমন লাভ নেই। খেয়াল করেছেন কি চলতি অর্থবর্ষে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার স্থায়ী আমানত থেকে পাওয়া সুদের চেয়ে বেশি! কারণ, বর্তমানে ২-৩ বছরের মেয়াদের ফিক্সড ডিপোজিটে ৫.১ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যায়। এদিকে চলতি অর্থবর্ষে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ৫.৩ শতাংশ থাকবে।
একদিকে স্থায়ী আমানত থেকে পাওয়া সুদের হার ৫.১ শতাংশ, অন্যদিকে চলতি অর্থবর্ষে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ৫.৩ শতাংশ। অর্থাৎ, ফিক্সড ডিপোজিটে জমানো টাকায় প্রাপ্ত সুদের হার বাস্তবে দাঁড়াচ্ছে -০.৩ শতাংশ।
মোদ্দা কথা, ফিক্সড ডিপোজিটে জমানো টাকা থেকে যে পরিমাণ সুদ পাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির জেরে। অর্থাৎ, সঞ্চয়ে আয়ের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর কেনাকাটায় আম জনতার খরচ হচ্ছে বেশি! মোটের ওপর ক্ষতি হচ্ছে।
কিষাণ বিকাশ পত্র-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সাড়ে ৬ শতাংশ বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি সুদ পাওয়া যায়। অর্থাৎ, সেই অর্থে এ ক্ষেত্রে সঞ্চয় খুচরো মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কা সামলেও কিছুটা বাড়বে।
তবে খাতায় কলমে সাড়ে ৬ শতাংশ সুদ পেয়েও দৈনন্দিন খরচের ঠেলায় বাস্তবে সঞ্চয় এক থেকে দেড় শতাংশের বেশি বাড়ছে না! অর্থাৎ, খুচরো মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় আখেরে আম জনতার সঞ্চয়ে টান পড়ছে।