১৮৪৪ সালে ভারতের তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল লর্ড হার্ডিঞ্জ ভারতে রেলপথ স্থাপন করার অনুমতি দেন। ভারতে রেল ব্যবস্থা চালু হয় তার ৯ বছর পরে, ১৮৫৩ সালে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময়, দেশে বিয়াল্লিশটি রেল ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল।
ভারতীয় রেল বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম রেল পরিবহণ ব্যবস্থাগুলির অন্যতম। প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ যাত্রী এবং প্রায় ২০ লক্ষ টন পণ্য ভারতীয় রেলপথের মাধ্যমে চলাচল করে।
বর্তমানে ৬,৯০৯টি স্টেশন ভারতীয় রেল ব্যবস্থার অন্তর্গত। ভারতের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৬৩,৩২৭ কিলোমিটারেরও বেশি। এ হেন সমৃদ্ধ রেল ব্যবস্থার পাশাপাশি এমন একটি রেলপথ রয়েছে, এমন একটি ট্রেন রয়েছে যেটি স্বাধীনতার সাত দশক পরেও ব্রিটিশ মালিকানাধীন!
প্রায় ১০০ বছর ধরে ভারতের বুকে আজও মন্থর গতিতে এগিয়ে চলেছে দেশের একমাত্র বেসরকারি রেলওয়েটি৷ প্রায় শতাব্দী প্রাচীন এই রেলওয়েটির নাম শকুন্তলা রেলওয়ে (Shakuntala Railways)৷
১৯২৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসিত ভারতে এই রেল চলাচল শুরু হয় কিলিক নিক্সন অ্যান্ড কোম্পানির (Killick-Nixon) হাত ধরে৷ এই রেল চালু করার উদ্দেশ্য ছিল ভারত থেকে তুলো রফতানি করে ইংল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া৷
মহারাষ্ট্রের যাভতমাল থেকে ন্যারো গেজ লাইন (মাত্র আড়াই ফুট চওড়া রেল লাইন) ধরে তুলো বোঝাই করে ট্রেন পৌঁছাত তৎকালীন বোম্বাইয়ে৷ বোম্বাই থেকে ওই তুলো জাহাজে করে পাড়ি দিত ম্যাঞ্চেস্টারের উদ্দেশে৷
—প্রতীকী ছবি।
চালু হওয়ার পর ৭১ বছর ধরে স্টিম ইঞ্জিনে চলার পরে ১৫ এপ্রিল, ১৯৯৪ সাল থেকে প্রথমবার এই ট্রেন চলে ডিজেল ইঞ্জিনে৷ ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিলোমিটার৷ ট্রেনের ভাড়া ২৫ টাকা। এখনও মোট ১৯০ কিলোমিটার পাড়ি দেয় এই ট্রেন।
—প্রতীকী ছবি।
অমরাবতী ডিভিশনের অধীনে চলা এই শকুন্তলা রেলওয়ের কর্মী সাকুল্যে ৭ জন৷ শকুন্তলা রেলওয়ের সিগনাল সামলানো, টিকিট কাটা থেকে মাল ওঠানামা সবটাই সামাল দিতে হয় এই ৭ জন কর্মীকেই৷
—প্রতীকী ছবি।
এই রেলওয়ের একটি গুদামঘর রয়েছে বটে, তবে তাতে আগাছার জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। পরিকাঠামো আধুনিকিকরণের খরচ অনেক। তাই ধুঁকতে ধুঁকতেও ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলেছে শকুন্তলা রেলওয়ে।