Real Estate Property: ফেলে রাখা জমি বিকোবে সোনার দামে, ২০২৬-এ মোদী সরকারের মেগা প্রজেক্ট

তবে ২০২৫ সালের এই সুযোগ যদি মিসও হয়ে থাকে, তাও চিন্তার কারণ নেই। ২০২৬ সাল ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য দারুণ অপশন হতে পারে। দেশের পরিস্থিতি এত দ্রুত বদল হচ্ছে যে, গতকালের অনুর্বর জমিও আজ সোনার দামে বিকোচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে দেশে পাঁচটি মেগা প্রজেক্ট শেষ হতে পারে। যার ফলে জমির দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

২০২৬ সালে খোলা হবে নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

এটি উত্তর ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হতে চলেছে। জেওয়ার বিমানবন্দরের প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি হবে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বিমানবন্দর। ২০২৫ সালেই নয়ডা এবং গ্রেটার নয়ডায় বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৬ সালে যখন এই বিমানবন্দর থেকে প্রথম বাণিজ্যিক বিমান চলাচল শুরু হবে, তখন এটি সমগ্র পশ্চিম উত্তর প্রদেশের অর্থনীতিকে বদলে দেবে। যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং গ্রেটার নয়ডার সেক্টরে (যেমন ১৮ এবং ২০) জমির দাম ইতিমধ্যেই ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে আরও ২৫-৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দিল্লি-মুম্বই এক্সপ্রেসওয়ে 

১৩৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে ভারতের দুটি বৃহত্তম শহরের মধ্যে সফরের সময় ২৪ ঘন্টা থেকে কমিয়ে ১২ ঘন্টায় নিয়ে আসবে। এটা শুধুমাত্র একটা এক্সপ্রেসওয়ে নয়, বরং একটি অর্থনৈতিক করিডোর হতে চলেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত এক বছরে সোহনায় (হরিয়ানা) জমির দাম ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে এক্সপ্রেসওয়ে সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে, এর রুটে গড়ে ওঠা লজিস্টিক পার্ক এবং টাউনশিপের দাম আকাশচুম্বী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সোহনা এবং গুরুগ্রামের ৮২-৯৫ নম্বর সেক্টর বিনিয়োগের জন্য এই মুহূর্তে দারুণ অপশন।

মুম্বই ট্রান্স হারবার লিঙ্ক ও নবি মুম্বই বিমানবন্দর

দেশের দীর্ঘতম সমুদ্র সেতু- অটল সেতু, এখন নবি মুম্বইয়ের ভবিষ্যৎকে বদলে দিচ্ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে নবি মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রথম টার্মিনাল চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এই এয়ারপোর্টটি চালু হলেই এলাকাটিকে "মুম্বই ৩.০" বলতে বাধ্য হতে হবে। এরফলে পানভেল এবং উলওয়ের মতো এলাকায় জমির দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এই এাকায় যাতায়াতের সময় ২ ঘন্টা থেকে কমে ২০ মিনিটে নেমে আসার ফলে প্রিমিয়াম আবাসনের চাহিদা এখন থেকেই বৃদ্ধি পেয়েছে।

অযোধ্যা মাস্টার প্ল্যান ২০৩১

রাম মন্দির উদ্বোধনের মাধ্যমে অযোধ্যা শহরটি শুধুমাত্র ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং বিশ্বের পর্যটকদের মানচিত্রেও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে নাম কুড়োতে শুরু করেছে। ২০২৬ সালের মধ্যে অযোধ্যায় বিশ্বমানের ফাইভস্টার হোটেল এবং বিলাসবহুল টাউনশিপ তৈরি হবে। মন্দিরের কাছে জমির দাম ইতিমধ্যেই পাঁচ থেকে দশগুণ বেড়েছে। এবার আউটার রিং রোড এবং 'নতুন অযোধ্যা' প্রকল্পে বিনিয়োগের সেরা সুযোগ রয়েছে। ফৈজাবাদ রোড, রায়বেরেলি রোড এবং রিং রোডের পাশের এলাকাগুলি শীঘ্রই বিনিয়োগকারীদের নজরে আসতে চলেছে।

গিফট সিটি -গুজরাট

গুজরাট ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স টেক-সিটি (গিফট সিটি) হল দেশের প্রথম স্মার্ট সিটি এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিষেবা কেন্দ্র। বুলেট ট্রেন (মুম্বই-আহমেদাবাদ) প্রকল্পটি ২০২৬ সালের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে এই এলাকার জমির দাম বহুগুণ বেড়ে যাবে। বাণিজ্যিক এবং প্রিমিয়াম আবাসিক সম্পত্তিগুলির উপর ৪০-৫০ শতাংশ রিটার্ন পাওয়া যেতে পারে। কারণ গুগল এবং ওরাকলের মতো  বিশ্বমানের কোম্পানিগুলি এখানে তাদের অফিস তৈরির কাজে হাত দিয়েছে।

বিনিয়োগের আগে কিছু বিষয় মনে রাখুন

• সবসময়ই RERA অনুমোদিত প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ করা উচিত।
• রিয়েল এস্টেটে লাভ পেতে গেলে কমপক্ষে ২-৩ বছর সময় দেওয়া উচিত। ২০২৬ সালে হল প্রকল্পগুলির মেয়াদপূর্তির সময়কাল।
• কোনও জমি কেনার আগে শুধু বড় প্রকল্পের কাছে জমি কিনতে হবে এমন কোনও কথা নেই। বরং সেখান থেকে স্থানীয় যোগাযোগ কেমন তাও দেখতে হবে।
• ২০২৬ সাল ভারতের রিয়েল এস্টেট বাজারের জন্য সেরা বছর হতে চলেছে। যদি সঠিক সময়ে এই মেগা প্রকল্পগুলির কাছাকাছি বিনিয়োগ করা যায়, তাহলে জমি সেরা সম্পত্তিতে পরিণত হবে।