
আইফোনে এই প্রথমবার পর্নের অ্যাপ। অ্যাপেলের আপত্তিকে আমল না দিয়েই Hot Tub নামের এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই অ্যাপেলের iOS অ্যাপস্টোরে সেই অ্যাপের ঠাঁই হয়নি। তবে অ্যাপেলের অ্যাপের একটি বিকল্প স্টোর আছে। তার নাম 'Altstore'। সেই স্টোরেই এই পর্ন অ্যাপ রাখা হয়েছে।
Hot Tub অ্যাপটি আপাতত ইউরোপের বাজারে চালু করা হয়েছে। Altstore-এর দাবি, ইউরোপের ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (DMA) সহ সমস্ত নিয়ম নীতি মেনেই এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। তবে, Apple এতে মোটেও খুশি নয়। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এমন অ্য়াপকে তারা কোনওদিনই সাপোর্ট করবে না। ব্যবহারকারীদের, বিশেষত শিশুদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই অ্যাপেলের এই সিদ্ধান্ত। Hot Tub আপাতত শুধুমাত্র ইউরোপের বাজারে আছে। আপাতত ফ্রি-তেই ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
এক অ্যাপে সব সাইট
হট টাব কিন্তু নিজেরা পর্ন ভিডিও হোস্ট করে না। এটা মূলত একটি অ্যাগ্রিগেটর। অর্থাৎ, এখানে, একটি ওয়েবসাইটের মধ্যেই Pornhub, Xvideos, XNXX এবং XHamster সহ বিভিন্ন অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট থেকে ভিডিও সার্চ এবং প্লে করা যাবে।
অ্যাপের ডেসক্রিপশনে বলা হয়েছে, 'বিজ্ঞাপন বা ট্র্যাকিং ছাড়াই এই অ্যাপে নিরাপদে অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট ব্রাউজ করা যাবে। প্রাইভেসি থাকবে এবং নিরাপদও। খুবই চিন্তাভাবনা করে ডিজাইন করা এবং নীতি-নৈতিকতা মেনেই তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই ব্যবহার করা যাবে।'
পর্নের বিশাল আয়
অনেকেই জানেন না, এই ধরনের পর্ন ওয়েবসাইটের রেভেনিউ বিরাট অঙ্কের। কোটি-কোটি টাকা আয় করেন সংস্থার মালিকরা। জানলে অবাক হবেন, বিশ্বের মোট ইন্টারনেট ট্রাফিকের ২০-৩০%-ই থাকে পর্ন সাইটে। এর ফলে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন চালিয়ে মোট টাকা আয় হয় সাইটগুলির। এর পাশাপাশি প্রিমিয়াম কনটেন্টের জন্য সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান, লাইভ ভিডিও মারফত সরাসরি আয়ও হয় পর্ন ওয়েবসাইটগুলির।
পর্নের অন্ধকার দিক
পর্ন সাইটগুলি সাধারণত সাইবার ক্রাইমের আঁতুড়ঘর হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাইটগুলি থেকে ডিভাইসে ট্রোজান, ম্যালওয়্যার আসতে পারে। ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে। এর পাশাপাশি পর্নের সাইটের মূলে রয়েছে বিশ্বব্যাপী পর্ন ইন্ডাস্ট্রি। নির্যাতনের শিকার হয়ে বা দ্রুত প্রচুর আয়ের লোভে অল্পবয়সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু নারী-পুরুষ পর্ন অভিনয়ে আসেন। জনি সিন্স, ড্যানি ড্যানিয়েল্সদের মতো অল্প কয়েকজন হয় তো প্রচুর আয় করেন। কিন্তু বেশিরভাগ পর্ন তারকাই নির্যাতনের শিকার হন। সামাজিক স্বীকৃতি হারিয়ে তাঁরা গভীর অবসাদের জগতে প্রবেশ করেন। এছাড়া যৌনতা-বর্ধক ওষুধের সাইড এফেক্ট, সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড রোগ, মাদকের নেশার কবলেও পড়েন অনেকে। বয়স বেড়ে গেলে নতুন কোনও পেশাও পান না তাঁরা। আর সেই কারণেই বিভিন্ন দেশে পর্নের বিরুদ্ধে প্রচার ও আইনি ব্যবস্থার নিদর্শন রয়েছে।