
বাড়ির দেওয়ালেই বট কিংবা অশ্বত্থ গাছ হওয়া মানেই বিপদ। দ্রুত ফাটল ধরিয়ে দেয়। এমনকী ঠিক সময়ে ব্যবস্থা না নিলে, বাড়ি ভেঙেও পড়তে পারে। অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে যাঁদের পুরনো বাড়ি, তাঁদের এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি। বেশি দিন ধরে ফেলে রাখলে, শেষ পর্যন্ত যখন মিস্ত্রি হাত দিলেই টাকার অঙ্ক বেড়ে যায়। কারণ, শিকড় চলে যায় গভীরে। এরকম হলে, দ্রুত সেই গাছ উপড়ে ফেলা সবচেয়ে ভাল।
এই সমস্যায় bangla.aajtak.in কথা বলেছে রাজমিস্ত্রি ও ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। বাড়ির দেওয়ালে বট গাছের শিকড় যদি গভীরে পৌঁছে যায়, তাহলে তা ভেঙে শিকড় সহ উপড়ে ফেলার পরে হিং দিলে ভাল। হিং দিয়ে, তার উপর প্লাস্টার করলে, ওই জায়গায় আর বট বা অশ্বত্থ গাছ গজানোর সুযোগ থাকে না।
কীভাবে গজিয়ে ওঠে এই গাছগুলি?
অশ্বত্থ বা বটগাছের বীজ সাধারণত পাখিরা খাওয়ার পর ছাদের ফাটলে, দেয়ালের ফাঁকে বা যেখানে জল জমে, সেখানে ফেলে যায়। আর্দ্রতা ও আলো ঠিকঠাক পেলে এই বীজ অঙ্কুরিত হয়। প্রথমে ছোট চারা গাছ হিসেবে দেখা দিলেও কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শিকড় ছড়িয়ে পড়ে দেওয়ালের ভেতর পর্যন্ত। যদি গাছটি একদম ছোট হয়, হাতে টেনে তুললেই কাজ মিটে যায়। তবে শিকড় যেন একটিও না থাকে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। কারণ অল্প শিকড় বেঁচে থাকলে আবার নতুন করে গাছ গজাবে। গাছ তোলার পর জায়গাটায় গরম জল ঢেলে দিন, এতে শিকড় সহজে নরম হয়ে যায় ও সম্পূর্ণ উঠে আসে।
মাঝারি গাছ তুলতে দরকার একটু কৌশল
যদি গাছ কিছুটা বড় হয়ে যায়, তখন প্রথমে পৃষ্ঠের কাছাকাছি কেটে ফেলুন। এরপর ধারালো কিছু দিয়ে শিকড়ের মধ্যে ২ বা ৩টি ছোট গর্ত করুন। সেই গর্তে শুকনো লবণ বা ব্লিচ (যা জলের সঙ্গে মেশানো নয়) ঢালুন। লবণ বা ব্লিচ শিকড় শুকিয়ে মেরে ফেলবে। এই প্রক্রিয়া কয়েকদিন ধরে করলে গাছ আর ফিরে আসবে না। বাজারে শিকড় শুকোনোর স্পেশাল কেমিক্যালও পাওয়া যায়, ব্যবহার করার আগে অবশ্যই গ্লাভস পরা উচিত।
যদি গাছের আকার অনেক বড় হয়ে যায় এবং শিকড় গভীর পর্যন্ত ঢুকে পড়ে, তখন নিজের পক্ষে তা উপড়ে ফেলা বিপজ্জনক হতে পারে। এই অবস্থায় পেশাদার ইঞ্জিনিয়ার বা মিস্ত্রির সাহায্য নিন। এ ধরনের পরিষেবার খরচ সাধারণত ৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে পড়ে, গাছের আকার ও অবস্থার উপর নির্ভর করে।
তাই গাছ যত ছোট, সমাধান তত সহজ, সময় থাকতে ব্যবস্থা নিন, বাড়িকে রাখুন সুরক্ষিত ও মজবুত।