দীপাবলিতে এ বছর দেশের অটোমোবাইল শিল্পে নতুন উচ্ছ্বাস। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছেন, ২২ সেপ্টেম্বর কার্যকর হওয়া জিএসটি ২.০ সংস্কারের পর মাত্র এক মাসেই দেশের গাড়ি বিক্রি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তার দাবি, 'জিএসটি ২.০ বাস্তবায়নের পর থেকে গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ৫ লক্ষ ইউনিট অতিক্রম করেছে', যা ভারতীয় অটো সেক্টরে এক ঐতিহাসিক বৃদ্ধি।
বিক্রির আনুমানিক পরিমাণ ৭ লক্ষ ইউনিট
অর্থমন্ত্রী জানান, দীপাবলি পর্যন্ত গাড়ি বিক্রির আনুমানিক পরিমাণ ৬.৫ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ ইউনিটের মধ্যে হতে পারে। ডিলারশিপে ব্যাপক ভিড় ও গ্রাহকদের ক্রয়উৎসাহ দেখে বোঝা যাচ্ছে, কর কাঠামোর এই সংস্কার সরাসরি বাজারে প্রভাব ফেলেছে। জিএসটি ২.০ কেবল করের হার হ্রাসই নয়, বরং শিল্পে এক নতুন ইতিবাচক আবহ তৈরি করেছে, যা ই-কমার্স ও অন্যান্য খাতেও প্রবৃদ্ধি এনেছে।
টাটা মোটরস: ৩০ দিনে বিক্রি ১ লক্ষ গাড়ি
টাটা মোটরস জানিয়েছে, নবরাত্রি থেকে দীপাবলির মধ্যে মাত্র ৩০ দিনে তারা ১ লক্ষেরও বেশি গাড়ি সরবরাহ করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩৩% বৃদ্ধি। কোম্পানির এমডি ও সিইও শৈলেশ চন্দ্র বলেন, 'SUV মডেলগুলিই বিক্রিবৃদ্ধির মূল কারণ।'
নেক্সন বিক্রি হয়েছে ৩৮,০০০ ইউনিট — বৃদ্ধি ৭৩%
পাঞ্চ বিক্রি হয়েছে ৩২,০০০ ইউনিট — বৃদ্ধি ২৯%
মারুতি সুজুকি: ৩.৫ লক্ষ গাড়ি বিক্রির রেকর্ড
অন্যদিকে, দেশের বৃহত্তম গাড়ি প্রস্তুতকারক মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়া দীপাবলির মরশুমে তার নেতৃত্ব আরও মজবুত করেছে। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত সংস্থাটি ৩.৫ লক্ষ গাড়ি বিক্রি করেছে, পাশাপাশি ৪.৫ লক্ষেরও বেশি বুকিং নিবন্ধিত হয়েছে।
ধনতেরাসের দিনই কোম্পানি প্রায় ৩৮,৫০০ ইউনিট সরবরাহ করেছে, যা দিনের শেষে ৪১,০০০ ইউনিটে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। সংস্থার মোট বিক্রয়মূল্য এই মরশুমে ছুঁয়েছে ৬.০৫ লক্ষ কোটি টাকা, যা কমে যাওয়া জিএসটি হার ও দেশীয় পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির ফল।
উৎসবের বিক্রিতে কর্মসংস্থানের জোয়ার
বাণিজ্য সংগঠন CAIT-এর তথ্য অনুযায়ী, দীপাবলির এই বিক্রিবৃদ্ধির ফলে লজিস্টিকস, পরিবহন, প্যাকেজিং ও ডেলিভারি খাতে প্রায় ৫০ লক্ষ অস্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, জিএসটি ২.০ সংস্কার ভারতের অটো সেক্টরে কেবল সাময়িক উত্থান নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। দীপাবলির এই বিক্রির রেকর্ড ইঙ্গিত করছে, আগামী মাসগুলোতে ভারতের বাজারে ভোক্তা আস্থা আরও বাড়বে, আর সেই আলোয় ঝলমল করবে দেশের অর্থনীতি।