
আজ থেকে ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও কেউ এত 'কোটি কোটি' করত না। তবে এই সময়ের মধ্যে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি। তাই বর্তমানে প্রায় সকলেই কোটি টাকা জমানোর কথা বলছেন। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ১ কোটিতে নিয়ে যাওয়া সহজ কোনও বিষয় নয়। বরং কয়েকটি নিয়ম মেনেই এই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যেতে পারে। আর সেই টিপসই দিলেন দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং Manasi Research Foundation-এর চেয়ারম্যান মানসকুমার ঠাকুর।
প্রথমেই যত সমস্যা
এই প্রসঙ্গে মানসবাবু বলেন, 'বাবা-মায়ের জমির উপর বাড়ি করাটা খুবই সহজ। এটা একটু চেষ্টা করলেই করে ফেলা সম্ভব। কিন্তু যদি জমি কিনে বাড়ি করতে হয়, তাহলে বিষয়টা অনেকটা কঠিন হয়ে ওঠে। আর প্রথম ১ কোটি জমানোটাও এতটাই জটিল বিষয়। প্রথমবার এই লক্ষ্যে পৌঁছাতেই যত সমস্যা। একবার পৌঁছে গেলে কিন্তু সামনের পথ মসৃণ। তখন অনায়াসে আপনি পরের কোটিগুলিতে পৌঁছে যেতে পারবেন।'
কীভাবে প্রথম ১ কোটি কামাবেন?
এই প্রসঙ্গে মানসবাবু জানান, যে কোনও মানুষ এক কোটি কমাতে পারেন। সেক্ষেত্রে হ্যাভিট গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই খেলা ঘুরে যাবে।
সেভিংস হ্যাভিট তৈরি করুন
একদম ছোট থেকেই সেভিংস হ্যাভিট তৈরি করতে হবে। যা অর্থ উপার্জন করা হয়, তার অধিকাংশটাই জমিয়ে ফেলতে হবে জীবনের প্রথম দিকে। এক্ষেত্রে পারলে উপার্জনের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা জমানো যেতে পারে। তাতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভরে যাবে।
একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরুন একজন মানুষ ২৩ বছর বয়সে ৪০ হাজার টাকা ইনকাম করছেন। এই সময় নিশ্চয়ই তাঁর উপর দায়িত্ব কম। তাই তিনি চাইলে অনায়াসে ৩০ হাজার বা ২৫ হাজার টাকা মাসে জমিয়ে নিতে পারেন। এভাবে মাত্র ৭ বছর চলুক। ধরা যাক ৩০-এ তিনি বিয়ে করলেন বা অন্য দায়িত্ব নিলেন। তবে এই ৭ বছরেই যে জমে গিয়েছে অনেকটা টাকা। এ বার সেই টাকা যদি কম্পাউন্ড হয়, তাহলেই তো কেরিয়ারের ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যেই তিনি হয়ে যাবেন কোটিপতি। তাকে আর অপেক্ষা করতে হবে না বলে মনে করেন মানসবাবু।
বিনিয়োগ জরুরি
মাথায় রাখতে হবে, বয়স যখন কম, তখন একটু রিস্ক নেওয়া সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে যদি মিউচুয়াল ফান্ড বা স্টক মার্কেটে টাকা রাখা যায়, তাহলে মোটামুটি ১২ শতাংশ রিটার্ন প্রতিবছর পাবেন। আর তাতেই হবে কাজ। দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি টাকা বৃদ্ধি পাবে।
তবে বয়স একটু বেশির দিকে থাকলে অবশ্যই সেফ খেলুন। এই সময় নিজের পোর্টফোলিওকে ডাইভার্সিফাই করতে হবে। শেয়ারমার্কেটের পাশাপাশি অন্যান্য জায়গাতেও টাকা রাখতে হবে। তাহলেই সুরক্ষিত থাকবে ভবিষ্যৎ।
খরচ করুন সামলে
চেষ্টা করুন খুব সামলে চলার। বাজে খরচ করবেন না। বিশেষত, ইএমআই-তে ফোন কেনার ভুল চলবে না। এই নিয়মটা মেনে চললেই অনায়াসে টাকা বাঁচবে। সেই টাকা জমিয়ে আপনি হয়ে উঠবেন কোটিপতি।