Gold Silver Price Fall Again: সোনা, রুপোর আরও দাম কমল, পতন চলছেই, এখনই কেনা উচিত নাকি আরও অপেক্ষা?

সোনা ও রুপোর দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর কমেছে
রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর, সোনা ও রুপোর দ্রুত মুনাফা বুকিং তাদের দামের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাসের লক্ষণগুলিও তাদের দামের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রায় দুই মাসের অসাধারণ বৃদ্ধির পর এই তীব্র পতন দেখা যাচ্ছে। গত সোমবার থেকে এই সোমবার পর্যন্ত সোনার দাম ১,৩০,৬২৪ টাকা থেকে কমে ১,২১,০৪৩ টাকায় দাঁড়িয়েছে। রুপো তার সর্বোচ্চ থেকে প্রায় ২১,০০০ টাকা কমেছে। সোনা তার সর্বকালের সর্বোচ্চ থেকে ১১,৬০০ টাকা কমেছে, যেখানে রুপো ২৭,৮০০ টাকা কমেছে। শুধু এমসিএক্সেই নয়, দেশীয় বাজারেও, এই সময়ের মধ্যে, সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ১,২৭,৬৩৩ টাকা থেকে কমে ১,২১,০৭৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে রুপোর দাম এই সময়ের মধ্যে প্রতি কেজি ১,৬৩,০৫০ টাকা থেকে কমে ১,৪৫,০৩১ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

আজকের সোনার দাম
আজ কলকাতায়  ২৪ ক্যারেট প্রতি গ্রাম সোনার দাম ১২,২৪৬ টাকা , ২২ ক্যারেট  প্রতি গ্রাম  সোনার দাম ১১,২২৫ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট  প্রতি গ্রাম  সোনার দাম ৯,১৮৪ টাকা।

আজকের রুপোর দাম
আজ, মঙ্গলবার, ২৮  অক্টোবর রুপোর দাম সামান্য কমেছে। গতকালের তুলনায়, রুপোদাম ১০০ টাকা কমেছে। কলকাতায় রুপোর দাম প্রতি কেজি ১,৫৪,৯০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

প্রথম বিশেষজ্ঞ যা বলছেন
সোনা ও রুপোর দামের পতনের বিষয়ে, অ্যাক্সিস সিকিউরিটিজের সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট (কমোডিটিজ) দেব্যা গাগলানি বলেছেন,  কমেক্স গোল্ড গত সপ্তাহে তার নয় সপ্তাহের উত্থানের ধারা ভেঙেছে, যদিও এই সপ্তাহের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ট্রাম্প-জিনপিং বৈঠকের আগে লাভ বুকিংয়ের কারণে এটি ৩% এরও বেশি কমেছে। প্রসঙ্ত,মালয়েশিয়ায় দুই দিনের আলোচনার পর দুই দেশের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির প্রাথমিক চুক্তির খবর প্রকাশিত হওয়ায়, বাণিজ্য উত্তেজনা হ্রাসের প্রত্যাশা নিরাপদ স্বর্গ হিসেবে বিবেচিত সোনা ও রুপোর চাহিদার উপর প্রভাব ফেলছে। দুই বৃহত্তম অর্থনীতির প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠকের পাশাপাশি, বাজারের দৃষ্টি মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ, ইউরোপিয় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং জাপান ব্যাঙ্কের দিকেও রয়েছে ।

তবে, গাগলানি বলছেন,  দেশীয় বাজারে, প্রতি ১০ গ্রামে সোনার দাম ১,১৭,০০০ টাকা এবং প্রতিরোধের হার ১,২৪,০০০ টাকায় পৌঁছেছে। সহজ কথায়, আগামী দিনগুলিতে সোনার দাম সীমার মধ্যে থাকবে, তীব্র হ্রাসের সম্ভাবনা খুব কম। গাগলানি বিনিয়োগকারী এবং ক্রেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন, ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো না করে অপেক্ষা করা উচিত।

দ্বিতীয় বিশেষজ্ঞ কী বলছেন?
সোনা-রুপোর দরপতনের বিষয়ে, অ্যাসপেক্ট বুলিয়ন অ্যান্ড রিফাইনারির সিইও দর্শন দেশাই বলেছেন,  সম্ভাব্য মার্কিন-চিন চুক্তি এবং শক্তিশালী মার্কিন ডলারের মধ্যে, নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং এর প্রভাব সোনা ও রুপোর দামের পতনের আকারে দেখা গেছে। তিনি বলেন,  এই সপ্তাহটি সোনার বাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে ট্রাম্প-জিনপিংয়ের বৈঠক, মার্কিন ফেডের নীতিগত হার ঘোষণা, পাশাপাশি অনেক বড় আইটি কোম্পানির আয়ের রিপোর্টও প্রকাশিত হতে চলেছে।

তিনি মনে করেন,  বিনিয়োগকারীদের অস্থিরতার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত। তিনি আরও বলে, মার্কিন-চিনের ইতিবাচক খবর অথবা ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সোনার মুনাফা আরও বাড়বে। বুধবার যদি ফেড প্রত্যাশিত সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দেয়, তাহলে তা সোনার দামের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে। রুপোর বিক্রির ক্ষেত্রেও চাপ তৈরি করতে পারে।

তৃতীয় বিশেষজ্ঞ বললেন কী হতে চলেছে?
মেহতা ইক্যুইটিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমোডিটিজ) রাহুল কালান্ত্রির মতে, বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীরা সোনা ও রুপোর মতো নিরাপদ আশ্রয়স্থল থেকে স্টকের মতো ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে ফান্ড  স্থানান্তরিত করায় রুপোর দাম কমেছে। শক্তিশালী ডলার বিদেশি ক্রেতাদের জন্য মূল্যবান ধাতুর দাম বাড়িয়েছে, যার ফলে চাহিদা কমেছে। রাহুলের মতে, যদি বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতি শান্ত থাকে এবং ডলার আরও শক্তিশালী হয়, তাহলে মূল্যবান ধাতুগুলি দাম বাড়ার ক্ষেত্রে  আরও প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে পারে।

এটি চতুর্থ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
ইন্ডিয়া বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অ্যাসপেক্ট গ্লোবাল ভেঞ্চার্সের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান অক্ষয় কাম্বোজের মতে, সোনা ও রুপোর এই পতন একটি ইতিবাচক উন্নতি। অবশেষে, দুই মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো, উভয় মূল্যবান ধাতুরই সাপ্তাহিক পতন রেকর্ড করা হয়েছে। মার্কিন-চিন উত্তেজনা ছাড়াও, ইটিএফ বহির্গমন এবং অতিরিক্ত ক্রয়ের পরে বিনিয়োগকারীদের দ্বারা মুনাফা-বুকিং এর প্রধান কারণ। তিনি বলেন, এই পতন সীমিত  সময়ের হতে পারে। কাম্বোজের মতে, আগামী সপ্তাহটি নির্ণায়ক হবে। অতএব, কোনও কেনাকাটা করার আগে ট্রাম্প-শি জিনপিং বৈঠকের ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।