চিন হাই-স্পিড ট্রেন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে নতুন মাইলফলক স্থাপন করল। রবিবার, চিন তাদের সর্বশেষ আপডেটেড বুলেট ট্রেনের মডেল চালু করেছে, যার গতি পরীক্ষামূলকভাবে ঘণ্টায় ৪৫০ কিলোমিটারে পৌঁছেছে। নির্মাতারা দাবি করেছেন, এটি বিশ্বের দ্রুততম উচ্চ-গতির ট্রেন হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। নতুন এই মডেলটির নাম দেওয়া হয়েছে CR450 প্রোটোটাইপ।
দ্রুতগামী এবং উন্নত প্রযুক্তি
চিন স্টেট রেলওয়ে গ্রুপের (China Railway) দেওয়া তথ্যানুসারে, CR450 প্রোটোটাইপ ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনবে। এটি দেশের বিপুল সংখ্যক যাত্রীর জন্য ভ্রমণকে আরও সুবিধাজনক এবং কার্যকরী করবে।
সরকারি সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, পরীক্ষার সময় ট্রেনটি ঘণ্টায় ৪৫০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি, এর অপারেটিং গতি, শক্তি সাশ্রয়, অভ্যন্তরীণ শব্দের মাত্রা এবং ব্রেকিং সিস্টেমের উন্নত প্রযুক্তি ট্রেনটির কর্মদক্ষতাকে বাড়িয়েছে। বর্তমানে যে CR400 ফুসিং (Fuxing) ট্রেন পরিষেবায় রয়েছে, তার সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার। নতুন এই CR450 তার থেকেও দ্রুতগামী।
উন্নত কানেক্টিভিটি
চিন রেলওয়ে জানিয়েছে, CR450 মডেলটি এখন লাইন পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর প্রযুক্তিগত সূচকগুলির অপ্টিমাইজেশন করা হবে, যাতে এটি যত দ্রুত সম্ভব বাণিজ্যিক পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
চিনের হাই-স্পিড রেল নেটওয়ার্ক
চিনের হাই-স্পিড রেল (HSR) নেটওয়ার্ক বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বিস্তৃত। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই নেটওয়ার্কের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৭,০০০ কিলোমিটার। এটি দেশের প্রধান শহরগুলিকে সংযুক্ত করেছে এবং ভ্রমণের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে। যদিও লাভজনক দিক থেকে এখনও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, তবে চিন দাবি করেছে যে এইচএসআর নেটওয়ার্ক দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আন্তর্জাতিক প্রসার
চিনের এইচএসআর প্রযুক্তি এখন আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রসারিত হয়েছে। থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি সার্বিয়ার বেলগ্রেড-নোভি স্যাড রেলপথেও এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ গবেষণা অনুযায়ী, বেইজিং-সাংহাই রুটটি সবচেয়ে লাভজনক হলেও অন্যান্য রুটগুলি এখনও লাভের মুখ দেখেনি।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
CR450 প্রোটোটাইপের উন্নয়ন চিনের উচ্চ-গতির ট্রেন প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এটি শুধু দেশের পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও দ্রুত ও কার্যকর করবে না, বরং বিশ্বে হাই-স্পিড রেল প্রযুক্তিতে চিনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করবে।
চলতি বছরের মধ্যেই এই ট্রেন বাণিজ্যিকভাবে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ভ্রমণকারীরা আরও দ্রুত এবং আরামদায়ক পরিষেবা উপভোগ করতে পারবেন।