এ বছর কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে তারাপীঠে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। ইতিমধ্যেই তারাপীঠে ভক্তরা আসতে শুরু করে দিয়েছেন। সেই ভিড় সামাল দিতে দফায় দফায় প্রশাসনের তরফ থেকে বৈঠক করা হচ্ছে। তবে প্রত্যেক বছর তারাপীঠে যে রেটে হোটেল ভাড়া নেওয়া হয়, এবার সেই দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও কমতে দেখা যাবে। এ বছর কোনও প্যাকেজ সিস্টেম রাখা হচ্ছে না হোটেলে। প্রসঙ্গত, এ বছর ৭ থেকে ৮ লক্ষ ভক্তের ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তারাপীঠে।
তারাপীঠ মন্দিরের পাণ্ডা তথা মন্দিরের পুরোহিত জয়ন্ত কুমার এ বিষয়ে জানিয়েছেন যে বীরভূমের জেলা শাসক বিধান রায় মিটিং করে বলে দিয়েছেন যে এ বছর হোটেলে কোনও প্যাকেজ সিস্টেম রাখা হবে না। হোটেল রুমের যে রকম ভাড়া সেটাই নিতে হবে। কেউ একদিন থাকলে তাঁর থেকে একদিনের ভাড়াই নেবে হোটেল। এ বছর প্রশাসন অত্যন্ত কড়াভাবে এই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে হোটেলের ভাড়া এই ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বরের জন্য সামান্য বাড়ানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, দর্শনার্থীদের অভিযোগ ছিল অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে হোটেলের তরফ থেকে ৷ সেই ঘটনা যাতে আবার না ঘটে সেই জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একটি হেল্প ডেস্ক নম্বর খোলা হবে যেখানে পুণ্যার্থীদের হোটেল ভাড়া নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে সেখানে জানাতে পারবেন এবং সেই নিয়ে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেবে হোটেল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে প্রশাসন। এছাড়াও কৌশিকী অমাবস্যার পুণ্য তিথিতে দ্বারকা নদীর ঘাটে স্নান করতে গিয়ে যদি কেউ সমস্যার সম্মুখীন হন, তাঁদের জন্য ডুবুরির ব্যবস্থা করা হবে নদীর প্রত্যেকটি ঘাটে।
অতিমারি পর্বের পর গত বছর কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে হোটেলভাড়া মাত্রা অত্যন্ত বেশি ছিল৷ এই বছর যাতে ওই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই কথা মাথায় রেখে হোটেল ভাড়া রাখা হয়েছে স্বাভাবিক। প্রসঙ্গত, গত বছর হোটেল ভাড়া মাত্রাতিরিক্ত ছিল। সেই সময় তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যায় হোটেলের ভাড়া উঠেছিল ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত, যা শুনে রীতিমত মাথায় হাত পড়েছিল বগু পুণ্যার্থীর। সারা বছর এই সময়টায় মায়ের পুজো দেওয়ার অপেক্ষায় থাকেন অনেকেই। আচমকা হোটেলের ভাড়া এত বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন অনেকে। এই বিষয়ে গত বছর বহু পুণ্যার্থী অভিযোগও জানিয়েছিলেন। আর সেই কারণে এ বছর প্রশাসনের পক্ষ থেকে এত কড়াকড়ি নিয়ম করা হয়েছে।
এই বছর ৭ থেকে ৮ লক্ষের ভক্তের সমাগম হতে পারে তারাপীঠে। আর সেই নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে একেবারে তুঙ্গে। গোটা তারাপীঠ এলাকায় বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লাগানো হয়েছে ১৪০টিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা। ব্যবস্থা করা হয়েছে ড্রোনেরও। সেখান থেকে নজর রাখা হবে পরিস্থিতির ওপর।