যারা গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি পেতেন, তাঁদের ফের বায়োমেট্রিক আপডেট করতে হবে। না হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে গ্যাসের ভর্তুকি। কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। কেন্দ্র ভর্তুকিযুক্ত গ্যাস সিলিন্ডার প্রাপকদের বাধ্যতামূলকভাবে বায়োমেট্রিক আপডেট করতে হবে। কেন্দ্রের তরফে নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমার কথা উল্লেখ না করা হলেও, ডিলারদের দাবি, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে লিঙ্ক করাতে হবে। অর্থাৎ হাতে মাত্র এক মাস সময়।
প্রাথমিকভাবে গ্যাসের দোকানে গিয়ে বায়োমেট্রিক আপডেট করার কথা শোনা গেলেও, জানা গিয়েছে গ্রাহকদের দোকানে লাইন দিতে হবে না। গ্যাস ডিলাররা নিজেরাই পৌঁছে যাবেন গ্রাহকের দরজায়। কীভাবে হবে বায়োমেট্রিক আপডেট, তার পদ্ধতিও জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাড়িতে যখন এলপিজি সিলিন্ডার ডেলিভারি করতে যাবেন ডেলিভারিম্যানরা, তখন তারাই বায়োমেট্রিক আপডেট করিয়ে নেবেন। এর জন্য ডেলিভারিম্যানদের মোবাইলে থাকবে একটি বিশেষ অ্যাপ, সেই অ্যাপেই গ্রাহকের আঙুলের ছাপ বা মুখের ছবি স্ক্যান হবে। এরপর সেই তথ্য তোলা হবে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে। সূত্রের খবর, সবার প্রথমে উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় থাকা গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া কোনও গ্রাহক চাইলে গ্যাস ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসে গিয়েও জমা করতে পারেন কেওয়াইসি তথ্য ও বায়োমেট্রিক।
তবে সমস্যা একটাই। তা হল সময়। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে গোটা দেশে বায়োমেট্রিক আপডেট প্রক্রিয়া শেষ করা কঠিন। রয়েছে আরও কিছু সমস্যা। অনেক সময়ই যার নামে গ্যাস সিলিন্ডার থাকে, তিনি বাড়িতে অনুপস্থিত থাকেন। সেক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক কী ভাবে সংগ্রহ হবে?
এছাড়া ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে লম্বা ছুটি রয়েছে বড়দিন উপলক্ষে। তাই দেশের সব এলপিজি গ্রাহকের বায়োমেট্রিক সংগ্রহ এই অল্প সময়ে সম্ভব হবে কীভাবে? সরকারের পক্ষ থেকেও কোনও জনস্বার্থমূলক প্রচার না হওয়ায় অনেক মানুষ এই বিষয়ে জানেনই না। তারা হঠাত্ ডেলিভারিম্যানকে আঙুলের ছাপ বা মুখে ছবি স্ক্যান করার অনুমতি নাও দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে কী হবে?
পাশাপাশি কয়েক মাস আগেই এইপিএস (AEPS) পদ্ধতিতে প্রতারণার বিষয়টি সামনে এসেছিল। রাতারাতি গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছিল। প্রতারণার তদন্তে নেমে জানা যায়, বায়োমেট্রিক তথ্যের অপব্যবহার করেই প্রতারণা করা হচ্ছে। জমির রেজিস্ট্রি থেকে শুরু করে রেশন বা সাধারণ ফোনের সিম তোলার ক্ষেত্রেও বায়োমেট্রিক বাধ্যতামূলক। প্রতারকরা সেই তথ্যকে ব্যবহার করেই প্রতারণা করছিল।