বেতন কম, তাই অনেকেই সঞ্চয় করতে পারেন না। বেতন বাড়লে কিছু অর্থ বাঁচিয়ে সেভিংসের কথা ভাবেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এটা পুরোপুরি ঠিক নয়। কারণ সঞ্চয়ের জন্য অর্থের চেয়ে বেশি দরকার ইচ্ছাশক্তির। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমেই বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করার দরকার নেই। প্রতিদিন বা প্রতি মাসে অল্প পরিমাণ বিনিয়োগ করে, বড় সেভিংস করতে পারেন। আরও একটি বিষয় হল, অনেকেই কোটিপতি হতে চান। কিন্তু কটিপতি হওয়ার কোনও শর্টকার্ট নেই।
কোটিপতি হওয়ার ফর্মুলা?
আপনার যা বেতন বা উপার্জন সেখান থেকেই সঞ্চয় করে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন। যত তাড়াতাড়ি আপনি বিনিয়োগ শুরু করবেন, লক্ষ্য তত সহজ হবে। প্রতিদিন মাত্র ২০ টাকা বাঁচিয়েও আপনি কোটিপতি হতে পারেন। যদিও প্রায়শই অনেককে বলতে শোনা যায় যে ১০-২০ টাকা বাঁচিয়ে কোটিপতি হওয়া যায় না, তবে সেটি নিছকই কথার কথা।
কোনও ব্যক্তি প্রতিদিন যদি ২০ টাকা বিনিয়োগ বা সেভিংস করেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত জমাতে পারবেন। কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব? চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বর্তমান সময়ে সবাই মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে জানেন। এখানে প্রতি মাসে বিনিয়োগের সুবিধা পাওয়া যায়। সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (SIP) এর মাধ্যমে প্রতি মাসে মিউচুয়াল ফান্ডে ন্যূনতম ৫০০ টাকাও বিনিয়োগ করা যায়। মিউচুয়াল ফান্ড অনেক সময়ই দীর্ঘ মেয়াদী ও বড়সড় রিটার্ন দিয়ে মানুষকে কোটিপতি করেছে। কিছু কিছু ফান্ড তো ২০ শতাংশ পর্যন্ত রিটার্ন দিয়েছে।
প্রথম রোজগার থেকেই বিনিয়োগ শুরু করুন
প্রশ্ন হল, দিনে ২০ টাকা জমিয়ে কীভাবে ১ কোটি টাকা আয় করা যায়? এর সূত্র হল - যদি একজন ২০ বছরের যুবক প্রতিদিন ২০ টাকা সঞ্চয় করেন, তাহলে মাসে সেটি হল ৬০০ টাকা। এই টাকা প্রতি মাসে মিউচুয়াল ফান্ডে SIP করতে হবে। এবার আপনাকে ভাবতে হবে যে আপনি প্রতিদিন ২০ টাকা বাঁচাতে পারবেন কি না?
৪০ বছর ধরে (অর্থাৎ ৪৮০ মাস) ক্রমাগত দৈনিক ২০ টাকা জমা রাখলে ১০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে। হিসাব হল যে এই বিনিয়োগে যদি গড় বার্ষিক ১৫% রিটার্ন দেওয়া হয়, তাহলে ৪০ বছর পর মোট সেভিংস ১.৮৮ কোটি টাকা হয়ে যায়। এই ৪০ বছরে বিনিয়োগকারী শুধুমাত্র ২,৮৮,০০০ টাকা জমা দেবেন। অন্যদিকে, যদি মাসে ৬০০ টাকার এসআইপি-তে ২০ শতাংশ রিটার্ন থাকে, তাহলে ৪০ বছর পর মোট ১০.২১ কোটি টাকা জমা হবে।
বড় ফান্ডের জন্য নিয়মিত বিনিয়োগ প্রয়োজন
এছাড়াও, যদি একজন ২০ বছর বয়সী যুবক প্রতিদিন ৩০ টাকা সঞ্চয় করেন, তাহলে তা একমাসে ৯০০ টাকা হয়। যদি কেউ এসআইপি-এর মাধ্যমে কোন ডায়ভার্সিফায়েড মিউচুয়াল ফান্ডে এই পরিমাণ বিনিয়োগ করেন, এবং 40 বছর পরে সেটি 12 শতাংশ বার্ষিক রিটার্নের হারে ১.০৭ কোটি টাকা হয়। এই সময়েরম মধ্যে তাঁকে ৪,৩২,০০০ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। আর কেউ যদি ৪০ বছরের জন্য বিনিয়োগ করতে না চান, তাহলে তাঁকে ওই একই পরমান টাকা পেতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এভাবে সহজেই ২০ বছরে কোটিপতি হওয়া যাবে।
তবে মিউচুয়াল ফান্ডে চক্রবৃদ্ধি সুদের কারণে, ছোট বিনিয়োগও দীর্ঘমেয়াদে বড় ফান্ডে পরিণত হয়। কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ঝুঁকি রয়েছে। তাই কোথাও বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই একজন আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
আরও পড়ুন - গরুর বাট থেকে সরাসরি দুধ খাচ্ছে বিড়াল! Video দেখলে অবাক হবেন