
দেশে প্রতিদিন যানবাহনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে পেট্রোল পাম্প মালিকদের আয়ও। এককালীন বিনিয়োগ করেই এই ব্যবসা থেকে আজীবন স্থায়ী আয় সম্ভব, এমনটাই বলছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত পেট্রোল পাম্প এখন লাভজনক ও স্থিতিশীল ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
পেট্রোল পাম্প খুলতে অবশ্যই প্রয়োজন বড় অঙ্কের বিনিয়োগ ও নানা প্রশাসনিক অনুমতি। গ্রামাঞ্চলে যেখানে অন্তত ২০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়, সেখানে শহরে এই খরচ দাঁড়ায় ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। জমির মূল্য অনুযায়ী বিনিয়োগ আরও বাড়তে পারে। বড় শহরে এমন প্রকল্পে ১ কোটিরও বেশি খরচ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। অনেক সময় ব্যাংক থেকে ২ কোটি পর্যন্ত ঋণও পাওয়া যায় এই খাতে।
প্রতি লিটারে কত কমিশন পান পাম্প মালিকরা
সরকারি নির্ধারিত কমিশন অনুযায়ী, পেট্রোল পাম্প মালিকরা প্রতি লিটার বিক্রিত জ্বালানিতে নির্দিষ্ট অঙ্কে কমিশন পান। দিল্লির উদাহরণ ধরলে, ১ লিটার পেট্রোলে পাম্প মালিকের আয় ৪.৩৯। বর্তমানে রাজধানীতে পেট্রোলের দাম ৯৪.৭৭, যার মধ্যে মূল দাম ৫২.৮৪, কেন্দ্রীয় আবগারি শুল্ক ২১.৯০ এবং রাজ্য ভ্যাট ১৫.৪০ টাকা। বাকি থাকে পাম্প মালিকের কমিশন।
যদি কোনও পেট্রোল পাম্প প্রতিদিন ৫,০০০ লিটার পেট্রোল বিক্রি করে, তাহলে দৈনিক কমিশন দাঁড়ায় প্রায় ২১,৯৫০। সমস্ত খরচ (কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি) বাদ দিয়েও প্রতিদিন অন্তত ১০,০০০ নিট আয় সম্ভব।
ডিজেলের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রতি লিটারে ৩.০২ কমিশন নির্ধারিত। ধরুন, প্রতিদিন ৫,০০০ লিটার ডিজেল বিক্রি হলে, কমিশন হিসেবে ১৫,১০০ পাওয়া যায়। খরচ বাদেও প্রায় ৭,৫০০ লাভ থেকে যায়। অর্থাৎ পেট্রোল ও ডিজেল মিলিয়ে একজন মালিকের দৈনিক আয় সহজেই ১৫,০০০ ছাড়াতে পারে।
কিভাবে পেট্রোল পাম্প শুরু করবেন
পেট্রোল পাম্প খোলার জন্য আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, এবং তিনি অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। শহরাঞ্চলে অন্তত ৮০০-১২০০ বর্গমিটার এবং গ্রামাঞ্চলে ১২০০-১৬০০ বর্গমিটার জমি প্রয়োজন হয়। জমি নিজস্ব বা লিজ নেওয়া, দুটোই চলবে।
IOCL, BPCL, HPCL ও Reliance-এর মতো প্রধান তেল কোম্পানিগুলি সময় সময় ডিলারশিপের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। আবেদন অনলাইনে করা যায়, যেখানে আধার, প্যান, জমির কাগজপত্র ও NOC জমা দিতে হয়। বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে -www.iocl.com
এবং www.reliancepetroleum.com