
ভারতে 'ধনী' আর 'গরীব', এই ধারণা কতটা আপেক্ষিক, তা নতুন করে সামনে এনেছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞ হিমাংশু পাণ্ড্য (CFA)। তাঁর যুক্তি, বছরে ৫০ লক্ষ টাকা বেতন পেলেও, অনেকেই প্রকৃত অর্থে ধনী নন। কারণ, এই আয় পুরোপুরি নির্ভর করে চাকরির উপর, যেখানে অর্থ আপনার জন্য কাজ করছে না, বরং আপনি অর্থের জন্য কাজ করছেন।
হিমাংশুর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, উচ্চবেতনভোগী পেশাদারদের বেশিরভাগই কেবল 'কর্মচারী', তারা তাদের বেতন ও বোনাসের উপরই নির্ভরশীল। ফলে আর্থিক স্বাধীনতা বা সম্পদ সঞ্চয় তাদের নাগালের বাইরে থেকে যায়। তিনি বলেন, প্রকৃত সম্পদ তখনই তৈরি হয়, যখন আপনার টাকা আপনাকেই আয় এনে দেয়, অর্থাৎ বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ আপনার জন্য কাজ শুরু করে।
লিংকডইনে ভাইরাল হওয়া তাঁর পোস্টে হিমাংশু পাণ্ড্য তুলে ধরেছেন তিনটি প্রধান দিক, যা অনুসরণ করলে একজন উচ্চবেতনভোগীও প্রকৃত অর্থে ধনী হতে পারেন-
১. স্মার্ট বেতন পরিকল্পনা করুন
শুধু বেতনের উপর কর দেওয়া নয়, বরং আয়ের কিছু অংশ HRA, LTA বা অন্যান্য করমুক্ত ভাতা হিসেবে নিন। পাশাপাশি, কর ছাড় প্রদানকারী স্কিমে বিনিয়োগ করুন। ধনী হওয়ার মূলমন্ত্র বেশি আয় নয়, বরং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে অর্থ পরিচালনা করা।
২. উপার্জনকারী থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে হাঁটুন
যদি আপনার আয় পরামর্শ, রয়্যালটি বা বিনিয়োগ থেকে আসে, তবে সেটি নিজের নামে কোনও কোম্পানি বা LLP-এর মাধ্যমে পরিচালনা করুন। এতে আপনি ব্যবসায়িক খরচের মাধ্যমে করের বোঝা কমাতে পারবেন। অনেকেই বেতন বাড়লে বিলাসবহুল জীবনযাপনে ঝুঁকে পড়েন, যা তাদের আর্থিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে।
৩. সঞ্চয় নয়, বিনিয়োগে মন দিন
শুধু সঞ্চয় নয়, বিনিয়োগই প্রকৃত সম্পদ সৃষ্টি করে। হাউজিং লোন, মিউচুয়াল ফান্ড বা অন্যান্য করসুবিধাযুক্ত বিনিয়োগে অংশ নিন। বেতনের অন্তত ১০ শতাংশ বিনিয়োগে রাখুন, যা ভবিষ্যতে আয় এবং সম্পদের উৎস হয়ে উঠবে।
হিমাংশু পাণ্ড্য শেষে বলেন, '৫০ লক্ষ আয় করাটা খারাপ নয়। কিন্তু যদি সেই আয় সঠিকভাবে পরিচালিত না হয়, তাহলে আপনি কেবল একজন উচ্চবেতনভোগী থাকবেন, ধনী ব্যক্তি নয়।'