খোলাবাজারে চালের দাম এখন সরকারি উদ্যোগে কেনা দামের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এর জেরে সরকারি উদ্যোগে চাল কেনার গতি কিছুটা মন্থর হয়ে গিয়েছে। তবে সরকারি উদ্যোগে ইতিমধ্যেই যে পরিমাণ চাল কেনা হয়েছে তা রেশন, মিড ডে মিল প্রকল্প ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চালের চাহিদা মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট। খোলাবাজারে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। যেখানে মোটা স্বর্ণ ধানের সরকারি নির্ধারিত দাম ১৯৬০ টাকা কুইন্টাল, সেখানে খোলাবাজারে এর দাম এখন কুইন্টাল প্রতি প্রায় ২১০০ টাকা। স্বর্ণ ধান থেকে উৎপাদিত চাল রাইস মিলেই মোটামুটি ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ইতিমধ্যে সরু চালের দামও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
মূলত খরিফ মরশুমে স্বর্ণ ধান চাষ করা হয়। গত মরশুমে উৎপাদিত চালের বেশিরভাগটাই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এ বছর চাহিদার তুলনায় স্বর্ণ ধানের জোগান কম হওয়ার কারণে এর দাম বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু গতবছর এই সময়ে চালের দাম এতটা বাড়েনি।
ব্যবসায়ীদের অনুমান, এই মরশুমে কম বৃষ্টির জেরে আমন ধানের ফলন বেশ কিছুটা মার খেতে পারে, এই আশঙ্কায় স্বর্ণ ধানের দাম দাম বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ। এ ছাড়াও, এ বছর বিদেশে প্রচুর পরিমাণে চাল রপ্তানি করা হয়েছে। রাজ্য সরকার রেশনের বাড়তি চাহিদা মেটাতে খোলাবাজার থেকেও টেন্ডার ডেকে চাল কিনেছে। সব মিলিয়েই এবার চালের চাহিদা বেড়েছে।
চলতি খরিফ মরশুমে এখনও পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে প্রায় ৫৩ লক্ষ টন চাল কেনা হয়েছে। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫ লক্ষ টন চাল কেনার। খোলবাজারে চালের দাম কুইন্টাল প্রতি প্রায় ১৭০০ টাকা। কিছুদিন আগেও এই দাম প্রতি কুইন্টালে ১৫০০ টাকা ছিল।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে চাল মিলগুলি থেকে রাজ্য সরকার যে পরিমাণ চাল সংগ্রহ করেছে তা একবছরের জন্য রেশন ছাড়াও কিছু আঞ্চলিক চাহিদা মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, এখনও রাজ্যের রাইস মিলগুলির কাছে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৬ লক্ষ টন চাল যা আগামী নভেম্বরের মধ্যেই পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে খোলা বাজারে চালের দাম ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা বাড়লেও রেশনে বন্টন হওয়া চালের দাম এখনই বৃদ্ধির তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই।