বয়স মাত্র ৩০, কিন্তু বিকাশ এখন থেকেই নিজের ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকল্পনায় মন দিয়েছেন। প্রতি মাসে ১০,০০০ টাকা সঞ্চয় করেন তিনি। সাধারণ সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে রাখা টাকায় সুদ খুবই কম, তাই বিকাশ এখন বিনিয়োগের কথা ভাবছেন। দীর্ঘমেয়াদে এই বিনিয়োগের মাধ্যমে কত টাকা আয় করা সম্ভব, তা জানতেই তিনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন। আশ্চর্যজনকভাবে, মাত্র ১০ হাজার টাকা মাসিক বিনিয়োগ করেও বিকাশ ৭ কোটি টাকার মালিক হতে পারেন! কীভাবে? আসুন দেখে নিই বিস্তারিত বিশ্লেষণ।
বিনিয়োগের সঠিক পদ্ধতি: SIP-এর শক্তি
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবলমাত্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে কোটিপতি হওয়া কঠিন। পরিবর্তে, যদি কেউ নিয়মিতভাবে সঠিকভাবে বিনিয়োগ করেন, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে বড় অঙ্কের সম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব। বিকাশের মতো কেউ যদি প্রতি মাসে ১০,০০০ টাকা সঞ্চয়ের পরিবর্তে মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে SIP (Systematic Investment Plan) করেন, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে তার বিপুল লাভ হতে পারে।
১০ বছরের বিনিয়োগ: শুরুতেই বড় রিটার্ন!
বিকাশ যদি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা SIP করেন এবং গড়ে বার্ষিক ১২% রিটার্ন পান, তাহলে ১০ বছর পর তার বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ২৩.২৩ লাখ টাকা। যদি রিটার্ন ১৫% হয়, তবে তিনি ২৭.৮৬ লাখ টাকা পাবেন। এসময় তিনি মোট ১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবেন, যা দ্বিগুণেরও বেশি পরিমাণে বেড়ে যাবে।
২০ বছরে বিনিয়োগ করলে মিলবে কোটিপতির তকমা!
সময় যত বাড়বে, ততই বিনিয়োগের লাভ বেড়ে যাবে। বিকাশ যদি ২০ বছর ধরে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে ১২% রিটার্নে তার মোট আয় হবে ৯৯.৯১ লাখ টাকা, যা প্রায় ১ কোটি টাকার সমান! আর যদি তিনি ১৫% রিটার্ন পান, তাহলে এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়াবে ১.৫১ কোটি টাকা। অথচ এই সময়ে তিনি মোট মাত্র ২৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবেন।
৩০ বছর পরে অবসরেও ৭ কোটি টাকার মালিক!
আরও দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে লাভের পরিমাণ আরও বেশি হয়। বিকাশ যদি ৩০ বছর ধরে এই ১০ হাজার টাকার SIP চালিয়ে যান, তাহলে ১২% রিটার্নে তার মোট সম্পদ হবে ৩.৫৩ কোটি টাকা। কিন্তু যদি ১৫% রিটার্ন পান, তাহলে তার হাতে থাকবে ৭ কোটি টাকারও বেশি! অর্থাৎ, ৬০ বছর বয়সে অবসর গ্রহণের সময় তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারেন।
বিনিয়োগে বৃদ্ধি: ১৫ কোটি টাকার স্বপ্নও সম্ভব!
আর্থিক পরামর্শদাতারা বলেন, মাসে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা ভালো, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পরিমাণ বাড়ানোও দরকার। যদি বিকাশ প্রতি বছর ১০% হারে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ান (যেমন প্রথম বছরে ১০ হাজার, পরের বছর ১১ হাজার, তারপর ১২,১০০...), তাহলে ৩০ বছর পর তার মোট সম্পদ হবে ১৫ কোটি টাকারও বেশি!
মাত্র ১০ টাকা দৈনিক বিনিয়োগেও ১ কোটি টাকা!
অন্যদিকে, যদি কেউ প্রতিদিন মাত্র ১০ টাকা সঞ্চয় করেন, অর্থাৎ মাসে ৩০০ টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে ১৫% হারে ৪০ বছরে সেই বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ৯৪.২১ লাখ টাকা! অথচ নিজের পকেট থেকে মোট ১.৪৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
(দ্রষ্টব্য: মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার আগে, একজন আর্থিক উপদেষ্টার সাহায্য নিন)