Solar Car: জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বমুখী দাম কার্যত ছ্যাঁকা দিচ্ছে মধ্যবিত্তের পকেটে। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামলেই কার্যত পকেট ফাঁকা হওয়ার জোগাড়। তবে লাগামছাড়া পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি থেকে রক্ষা পাওয়ার পথ খুঁজে নিলেন দুর্গাপুরের এক ব্যবসায়ী।
পেশায় ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবসায়ী মনোজিৎ মন্ডল নিজেই বানিয়ে ফেললেন সোলার বিদ্যুৎ চালিত চারচাকা গাড়ি। ন্যানো গাড়ি কাস্টমাইজ করে সোলার বিদ্যুৎ চালিত গাড়িতে রূপান্তর করেছেন তিনি। মনোজিৎ মন্ডলের আবিষ্কার হইচই ফেলে দিয়েছে দুর্গাপুরে।
মনোজিৎ মন্ডলের আবিষ্কার খুব সাধারণের মধ্যেও অনন্য। গাড়ির ছাদে লাগানো হয়েছে সোলার প্যানেল। যার মাধ্যমে চার্জ করা হচ্ছে একটি ব্যাটারি। সেই ব্যাটারির শক্তিতেই চলছে গাড়ি। সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়ি তৈরির জন্য ন্যানো গাড়ি বেছে নেওয়ার কারণ রয়েছে যথেষ্ট।
প্রথমত ন্যানো গাড়ি ছোট হওয়ায় তার ওজন কম। ফলে গাড়িটি চালাতে প্রয়োজন হবে কম হর্সপাওয়ারের। স্বাভাবিক ভাবেই অল্প চার্জে অনেকটা রাস্তা অতিক্রম করতে পারবে গাড়িটি। দ্বিতীয়ত, ন্যানো গাড়িতে পাঁচজন বসার মতো সুযোগ সুবিধা রয়েছে। ফলে সৌর বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি ফ্যামিলি ড্রাইভের জন্যও খুব সহজে কাজে লাগবে। যাদের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে প্রতিদিন রাস্তায় বেরোতে হয়, তাঁরা এই গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন।
একবার চার্জ করার পরে, গাড়িটি কমপক্ষে ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার রাস্তা চলাচল করতে পারবে। অন্যদিকে ন্যানো গাড়ির দাম কম হওয়ার ফলে, তা মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যেও থাকবে।
এই বিষয়ে সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়ির আবিষ্কারক মনোজিৎ মণ্ডল বলেছেন, প্রতিদিন যেভাবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে গাড়ি চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই বিকল্প জ্বালানি হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করার কথা তাঁর মাথায় আসে। সেই মতো তিনি এই গাড়িটি বানিয়েছেন।
পেশায় ব্যবসায়ী মনোজিৎ বলেছেন, ধীরে ধীরে সব দিকেই ইলেকট্রিক চালিত গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়িও খুব কম সময়ে মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। সৌর বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি ব্যবহার করলে যেমন জ্বালানি তেলের খরচ বাঁচবে, ঠিক তেমনভাবেই পরিবেশ দূষণও কমবে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং থেকে মুক্তি পেতে নতুন দিশা দেখাতে পারে এই গাড়ি।
বাণিজ্যিক ভাবে এই সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়ির উৎপাদন শুরু করতে চান। তিনি চাইছেন খুব কম খরচে মধ্যবিত্তের হাতে আসুক এই গাড়ি। তাতে মানুষের গাড়ি কেনার শখ পূরণ হবে। পাশাপাশি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পকেটও ফাঁকা হবে না। গাড়িটি বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করার জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন এই ব্যবসায়ী।
দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সঙ্গেও কথাবার্তা চলছে তার। মনোজিৎবাবু বলছেন, আলোচনা যদি সঠিক দিশায় যায় এবং সফল হয়, তাহলে দেড় লক্ষ টাকার মধ্যে মানুষের হাতে এই সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়ি তুলে দিতে পারবেন তিনি।