অপরূপ সুন্দর, লাস্যময়ী। একের পর এক সাহসী ছবি। ইনস্টাগ্রামে এমন মহিলার অ্যাকাউন্টে লক্ষ-লক্ষ ফলোয়ার্স হওয়াটা নতুন কিছু নয়। আর আজকের যুগে ফলোয়ার্স মানেই টাকা। তেমনই এক অ্যাকাউন্ট ছিল 'বেবিডল আর্চি'। বহু যুবকই তার প্রেমে-আকর্ষণে অজ্ঞান। সম্প্রতি প্রাপ্তবয়স্কদের ছবির তারকার সঙ্গে বেবিডল আর্চির একটি ছবিও ভাইরাল হয়। কিন্তু এখন যা জানা যাচ্ছে, তা Shocking বললেও কম বলা হবে।
পুরোটাই ফেক!
দিল্লিতে চাকরি করতেন প্রতিম বরা নামের এক মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার। অসমের ডিব্রুগড় থেকে সম্প্রতি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, এই বেবিডল আর্চির 'জনক' তিনিই। প্রাক্তন প্রেমিকার উপর বদলা নিতেই নাকি, তাঁর মুখ ব্যবহার করে AI ছবি বানিয়েছিলেন। কিন্তু পরে সেই অ্যাকাউন্টেই লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার্স এসে যায়।
একটা ছবি থেকেই তৈরি ‘বেবিডল আর্চি’
শুধুমাত্র একটি ছবি। সেই ছবিই হাতিয়ার করেছিলেন প্রতিম। প্রাক্তন প্রেমিকার একটি ফটো নিয়ে AI সফটওয়্যারের সাহায্যে তৈরি করেছিলেন অশ্লীল ছবি ও ভিডিও। প্রথমে তা ব্যক্তিগত প্রতিশোধের পর্যায়েই ছিল। পরে সেটাই হয়ে ওঠে আয়ের রাস্তা।
প্রথমে একটি ফেক আইডি খোলেন তিনি। নাম দেন, ‘Babydoll Archi’। তারপর সেই অ্যাকাউন্টে পোস্ট করতে থাকেন AI-র মাধ্যমে বানানো ইঙ্গিতবাহী ছবি ও ভিডিও। এতটাই নিখুঁত ছিল ভিজুয়ালগুলি যে, বহু মানুষ ভাবতে শুরু করেন, অসমের কোনও মেয়ে সত্যিই আমেরিকার পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছেন।
কেন্ড্রা লাস্টের সঙ্গে ছবিও AI-এর কারসাজি
এরই মধ্য়ে, সম্প্রতি বেবিডল আর্চির ইনস্টাগ্রামে এক জনপ্রিয় পর্নস্টার কেন্ড্রা লাস্টের সঙ্গে ছবি পোস্ট করা হয়। যদিও পরে জানা যায়, সেটিও AI-র তৈরি। কে, কীভাবে কেন্ড্রা লাস্ট সেই ছবি শেয়ার করলেন, তা তদন্ত করতে শুরু করে পুলিশ।
২০২০ সালের অগাস্টে খোলা হয়েছিল এই Babydoll Archi অ্যাকাউন্ট। জুলাই ১৪ পর্যন্ত অ্যাকাউন্টটির ফলোয়ার সংখ্যা পৌঁছে যায় ১৩ লক্ষে।
গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো
এই ডিজিটাল প্রতারণার জাল ছড়িয়ে দিতে প্রতিম আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, বেবিডল আর্চি নাকি দিল্লির জিবি রোডে ছয় বছর ধরে যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে ছিলেন। সেখান থেকে মুক্তি পেতে ২৫ লক্ষ টাকা দিচ্ছেন। আর সেই কারণেই তিনি পর্নে নামছেন। এর পরই দেশজুড়ে ভাইরাল হয়ে যায় অসমের মেয়ের পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে পড়ার খবর।
পুলিশের জালে ধরা
ডিব্রুগড়ের পুলিশ সুপার সিজল আগরওয়াল জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিম বরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, শুধুমাত্র একটি ছবির মাধ্যমেই বিভিন্ন AI সফটওয়্যারের সাহায্যে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও তৈরি করেছিলেন ওই ইঞ্জিনিয়ার।
Midjourney AI, Desire AI, OpenArt AI-র মতো সফটওয়্যার ব্যবহার করতেন তিনি। সেইসব ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে প্রাক্তন প্রেমিকার নামে ফেক পর্নস্টার ইমেজ তৈরি করেন। প্রথমে প্রতিশোধের উদ্দেশ্য থাকলেও, পরে আর্থিক লাভের জন্য কাজটি চালিয়ে যান।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিমের আর্থিক নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই অপারেশন থেকে অন্তত ১০ লক্ষ টাকা রোজগার করেছেন তিনি। তবে সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে।
ডিজিটাল প্রমাণ, ফেক ইমেল, ফেক প্রোফাইল, সবই এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্ত চলছে। শীঘ্রই আদালতে তোলা হবে অভিযুক্তকে।
খবরটি ইংরাজিতে পড়ুন: CLICK HERE.