তিন সপ্তাহ আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ঝড় তুলেছিল। যেখানে দেখা গিয়েছিল দিল্লির বৃদ্ধ এক ধাবা ওয়ালাকে। লকডাউনে খদ্দের হারিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। চোখের জলে দিন কাটছে বৃদ্ধ দম্পতির। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই আর্তি ছড়িয়ে পড়তেই ঝড় উঠেছিল নেটিজেনদের মধ্যে। আমজনতা থেকে তারকা সকলেই বিপুল ভাবে শেয়ার করেন অসহায় বৃদ্ধের সেই ভিডিও। আর তার পরেই দোকানে উপচে পড়েছিল ভির। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি ফেমাস ওয়ে ওঠা সেই বৃদ্ধ কান্তা প্রসাদই এবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন। আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল "বাবা কা ধাবা" যিনি ভাইরাল করেছিলেন তার বিরুদ্ধে F.I.R দায়ের করলেন বৃদ্ধ কান্তা প্রসাদ।
দক্ষিণ দিল্লিতে ছোট্ট খাবারের দোকান আশি বছরের কান্তা প্রসাদের। কিন্তু লকডাউনের পর দোকান খুললেও ক্রেতা পাচ্ছিলেন না তিনি। দিনের যা রোজগার তাতে দু-বেলা খাবার খেয়ে দিন কাটানো অসম্ভব হয়ে উঠছিল। আশি বছর বয়সে এসে এত বড় কঠিন লড়াই লড়তে পারছিলেন না তিনি। আর যিনি প্রথম জনসমক্ষে সেই বৃদ্ধ দম্পতির কষ্টের কথা তুলে ধরেন এবার সেই গৌরব ওয়াসানের নামেই থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন বৃদ্ধ।
দিল্লির ঘুমটি দোকানে ভাত, তরকা ডাল, চিকেন, হাতে তৈরি রুটি সব কিছুই নিজেরাই বানান বৃদ্ধ কান্তা প্রসাদ ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনে একেবারে বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। আনলক পর্যায়ে তাঁরা দোকান তো খোলেন, কিন্তু তাতে ক্রেতাদের দেখা মিলছিল না। বৃদ্ধের দোকানে খাবার খেতে এসেছিলেন গৌরব। গিয়ে দেখেন সব খাবার রেডি। তবে সারাদিনে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪০ টাকার। নিজের অসহায় অবস্থা গোপন করতে না পেরে সেদিন কেঁদে ফেলেন ওই বৃদ্ধ। এর পর গৌরব গোটা ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধকে পেট চালানোর জন্য কাঁদতে দেখে, গোটা ভারতের চোখে জল আসে। ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয় ভিডিওটি। শুধু তাই নয় গৌরব তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরটি শেয়ার করায় সেখানে অনেকেই সাহায্যের জন্য টাকা পাঠাতে থাকেন। ২৮ অক্টোবর একটি রেকর্ড করা ভিডিওতে নিজেই সেকথা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান ওই যুবক। গৌরব দাবি করেন, কান্তা প্রসাদের জন্য নেটিজেনদের থেকে সব মিলিয়ে ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। সমস্ত টাকাই চেকের মাধ্যমে বৃদ্ধ দম্পতিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে সেকথা মানতে রাজি নন কান্তা। উল্টে গৌরবের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছেন তিনি। বৃদ্ধের অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বাবা কা ধাবা’র নামে অনুদান তুলে নিজের পরিজন ও বন্ধুদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন গৌরব। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে।