Ghibli art trend: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম খুললেই এখন ঘিবলি আর্ট। অনেকেই নিজের অথবা কোনও জনপ্রিয় ছবির ঘিবলি আর্ট ভার্সান বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন। বেশ ট্রেন্ডিং। ChatGPT এমনিতেই গত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে তা মূলত এআই বা প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী অথবা, পেশাদারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এই ঘিবলি ট্রেন্ডে যেন এক ধাক্কা সবার ফোনেই স্থান পেয়েছে চ্যাটজিপিটি(ChatGPT Ghibli images)। একটি অতি সাধারণ ট্রেন্ডেই যে এত বড় চ্যাটবট সবার ফোনে ছড়িয়ে পড়বে, তা ভাবতে পারেননি চ্যাটজিপিটি-র নির্মাতাও। চ্যাটবটের মালিক সংস্থা ওপেনএআই। তার প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যান পুরো বিষয়টিতে বেশ হতবাক। তিনি বলছেন, প্রম্পটের ঠেলায় ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে। ইমেজ জেনারেশনের চক্করে চ্যাটজিপিটির উপর এখন রেকর্ড ইউজার ভিড় করছে। মজার ছলে স্যাম অল্টম্যান এক্স-এ লিখেছেন, 'সবাই একটু শান্ত হন! ছবি বানিয়েই চলেছেন! আজব তো... আমাদেরও তো ঘুম দরকার।'
দেখুন সেই টুইট
ঘিবলি আর্ট-এর ট্রেন্ড কী?
প্রথমেই জানতে হবে এই ঘিবলি? ঘিবলি জাপানের একটি জনপ্রিয় অ্যানিমেশন স্টুডিও। মূলত ৯০-এর দশে ও ২০০০ সালে তাদের বেশ কিছু জনপ্রিয় অ্যানিমেশন-ভিত্তিক সিনেমা রয়েছে। সেই সিনেমাগুলির গল্পও যেমন সুন্দর, তেমনই তা দৃষ্টিনন্দন। এই ছবিগুলির বেশিরভাগই ফ্রেম বাই ফ্রেম শিল্পীদের হাতে আঁকা। কম্পিউটারের ব্যবহার সীমিত। 'কার্টুন'-এর উর্ধ্বে, অ্যানিমেশনের যে সিনেম্যাটিক গুরুত্বও থাকতে পারে তা-ই প্রমাণ করেছে ঘিবলি স্টুডিও। এই স্টুডিও-র প্রতিষ্ঠাতা হায়াও মিয়াজাকি জাপানের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি।
আপনি চাইলে নেটফ্লিক্সে ঘিবলির বিভিন্ন অ্যানিমেশন সিনেমা দেখতে পারেন, যেমন- মাই নেবর টোটোরো, দ্য উইন্ড রাইসেস, হাউল্স মুভিং ক্যাসেল, স্পিরিটেড অ্যাওয়ে, গ্রেভ অফ দ্য ফায়ার ফ্লাইজ ইত্যাদি।
এখন যেটা চলছে
ঘিবলি স্টুডিও-র অ্যানিমেশনের প্রতিটি চরিত্র আঁকার একটি নির্দিষ্ট স্টাইল আছে। তাতে চোখ বড়, প্যাস্টেল শেডের ব্যবহার, জাপানের মানুষের গড়ন ফুটে ওঠে। মুখ, অঙ্গভঙ্গি ভীষণ এক্সপ্রেসিভ।
এআই ঘিবলির এই বিশেষ স্টাইলটিই সাধারণ ছবিতে ফুটিয়ে তুলছে। আর সেটাই মনে ধরেছে মানুষের।
ChatGPT-তে গিয়ে নিজের ছবি দিয়ে লোকে প্রম্পট(Ghibli style prompts) লিখছেন, 'Turn this image into a scene from Ghibli Studios anime.'
এআই নিয়ে হায়াও মিয়াজাকি যা বলেছিলেন
২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে ঘিবলি স্টুডিও-র প্রধান এআই-এর মাধ্যমে ছবি-অ্যানিমেশন আঁকার বিরোধিতা করেছিলেন। এআই মূলত ঘিবলি-রই অজস্র ছবির গড়ন চিনে সেটা অনুকরণ করে ছবি তৈরি করছে। ফলে আদতে সেটি ঘিবলি স্টুডিও-র শিল্পীদের অনুকরণ বলা যেতে পারে।
মিয়াজাকি তার নিন্দা করে বলেছিলেন, 'যাঁরাই এভাবে ছবি তৈরির ব্যবস্থা করছেন, তাঁরা জানেন না কষ্ট কী জিনিস... আমার মতে এটা হওয়া উচিৎ নয়, এটি দুঃখজনক।'
তাই ট্রেন্ডে গা ভাসানোর সময়েও, ঘিবলি-র স্রষ্টার এই কথাগুলি একবার ভেবে দেখতে ভুলবেন না।