রাজ্য সরকারের জনগণের জন্য সমস্ত প্রকল্প নিয়ে মানুষের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল। ঠিক সেভাবেই জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়িতে দুয়ারে মা-কালী নিয়ে হাজির হওয়ার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন। এবারে দুয়ারেই দর্শন হবে কালী প্রতিমার। সৌজন্যে মুক্তি দূত সংঘ। জোর হইচই ধুপগুড়িতে।
বাড়িতেই আসবেন মা
কালী প্রতিমা দেখতে আপনাকে আর বাড়ি থেকে পুজো প্যান্ডেলে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন দিতে হবে না।সামাজিক দূরত্ব শিকেয় তুলে ঠেলাঠেলি ভিড়ে আপনাকে হতে হবে না করোনা আক্রান্ত। কারণ এবার কালী প্রতিমা নিয়ে আপনার বাড়ির সামনে হাজির হবে ক্লাব কমিটি।
শুধু দরজা খুলে প্রণাম সেরে নিন
আপনাকে খালি বাড়ির দরজা খুলে প্রণাম সেরে নিতে হবে। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঠিক এমনটাই হচ্ছে ধূপগুড়ি শহরে। আর এই পূজো ঘিরে এবার জোর হৈচৈ শুরু হয়ে গেছে ধূপগুড়ি শহরে। ধূপগুড়ি মিলপাড়া এলাকায় গত ৫০ বছর ধরে কালীপুজো করে আসছে মুুক্তিদূত ক্লাব। প্রতিবার অভিনব পুজো করে এই পুজো কমিটি। এবারে সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে তাদের পূজোর থিম দুয়ারে " মা আদ্যা শক্তি "।
দুয়ারে কালী
ক্লাবের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে কিছুটা অন্য রকমের পুজোর ভাবনা নিয়ে থিম খুঁজে ফিরছিলেন ধূপগুড়ি মিলপাড়া এলাকার মুক্তিদূত সংঘ ও পাঠাগারের শ্যামাপুজো আয়োজকরা। পুজোর থিমে নতুনত্বের খোঁজে নামা আয়োজকরাও প্রথমটায় ভাবনা শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে ঐক্যমতে পৌছানো এবং দিন দশেক হলো নেমে পড়া এক নতুন থিমে। "দুয়ারে মা আদ্যা শক্তি এবং "‘দুয়ারে দীপান্বিতা’ বাস্তবায়নে।
চলমান কালীমূর্তি চাকার উপর
রবীন্দ্র ভারতীর আর্টের গ্রাজুয়েট এবং হায়দ্রাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি থেকে আর্টস এন্ড ক্রাফটসে মাস্টার্স ডিগ্রি করা চন্দননগরের তাপস মালিক ফুটিয়ে তুলেছেন কালীর দশ রূপ। তাদের সহযোগিতা করেন তাপসের ইউনিভার্সিটির দুই বন্ধু গয়েরকাটার পবন প্রসাদ এবং আলিপুরদুয়ারের প্রভাকর ঘোষ। করোনা ভাইরাস নিয়ে সচেতনতা গড়ার কাজ ফুটিয়ে তুলছে তারা। তবে চাকার ওপর চলমান মন্ডপ বানাতে গিয়েই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে মাটির কাজ। মূলত প্লাস্টার অফ প্যারিস, থার্মোকল, প্লাইউড, ছবি আকার ওয়াটার এবং প্যাস্টেল কালার দিয়েই তৈরি হচ্ছে মন্ডপ সজ্জা।
সরকারি প্রকল্প থেকেই অনুপ্রেরণা
ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট রতন কুমার রায় বলেন এবার আমাদের সুবর্ন জয়ন্তী। কিন্তু যেহেতু করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলছে তাই আমরা এবার " দুয়ারে মা আদ্যা শক্তি " এই থিমে পুজো করছি। এবার মা আদ্যা আপনার বাড়িতে যাবে। গাড়ির আগে ও পিছে বাইক র্যালি করে করোনা সচেতনতা প্রচার করবে ক্লাব সদস্যরা। ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ রতন বাঁশফোড় বলেন আমরা রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার বা দুয়ারে রেশন এইখান থেকে অনুপ্রেরনা নিয়ে এই অভিনব আয়োজন করেছি। যেহেতু করোনা সংক্রমণের বাড়ছে। একইসাথে চোখ রাঙাচ্ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। তাই আমরা বড় পূজো করে সেখানে প্রচুর লোক জমায়েত করে আর করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বাড়াতে চাইনা। তাই আমরা উদ্যোগ নিলাম কালী প্রতিমাকে ট্যাবলো আকারে লড়িতে চাপিয়ে ধূপগুড়ি শহর পরিক্রমা করবো। যেহেতু বিকেল ৪.৩০ থেকে শহরে নো এন্ট্রি তাই আমরা দিনের বেলাতেই এই ট্যাবলো বের করেছি। সারা শহর পরিক্রমা করে নির্দিষ্ট সময়ের আগে আমরা ক্লাব প্রাঙ্গনে ফিরে আসবো।