
যে করে হোক ভাইরাল হতে হবে। তাহলেই কোটি কোটি টাকা, গাড়ি, বাড়ি, এলাহি লাইফস্টাইল। সেই ফেমাস হওয়ার মোহেই ন্যূনতম বোধটুকুও হারিয়ে ফেললেন মধ্যপ্রদেশের এক যুবক। স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত নিজেই ভিডিও করলেন। তারপর তা ছড়িয়ে দিলেন বন্ধু, আত্মীয়দের কাছে। পুরোটাই স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে।
মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলার ঘটনা। অভিযুক্তের স্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর স্বামী পর্নের নেশায় বুঁদ ছিলেন। তাই নিজের স্ত্রীকে দিয়ে ১৩ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি অন্তরঙ্গ ভিডিও রেকর্ড করিয়ে তা বন্ধু-আত্মীয়দের কাছে ছড়িয়ে দেন। উদ্দেশ্য? পুলিশের কাছে তাঁর দাবি, 'ফেমাস হওয়া'।
পরিবার ও সমাজের চোখে যে তাঁদের অবস্থান কী দাঁড়াবে, তা নিয়েই ওই যুবকের মনে কোনও অনুতাপও নেই। তাঁর স্ত্রীর দাবি, স্বামী বারবার বলেছিলেন, 'পর্ন স্টারদের মতো আমাকে ফেমাস হতে হবে। ইচ্ছা করেই ভিডিও ভাইরাল করেছেন। এটা মানুষ নয়, দানব হওয়ার লক্ষণ। ঘটনার পর থেকে সবাই ফোন করছেন। কারও সামনে মুখ দেখানোর মতোও অবস্থা নেই।'
ওই যুবকের বিরুদ্ধে পণ নিয়ে অভিযোগও রয়েছে। তাঁর শ্যালকদের অভিযোগ, বিয়ের সময়ে প্রচুর পণ দাবি করেছিলেন অভিযুক্ত। সম্পূর্ণ টাকা না মেলায় দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি। সেই ক্ষোভ থেকেই প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছেন বলে সন্দেহ পরিবারের।
ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। রেওয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর শেষ লোকেশন ধরা পড়েছে মুম্বইয়ে। খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
গোপনীয়তার লঙ্ঘন, সাইবার অপরাধ, এবং নারীর মর্যাদাহানির মতো অপরাধ যে পরিবারের মধ্যেই হতে পারে, তারই প্রমাণ এই ঘটনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ভিডিও ছড়ানো আইপিসি ৩৭৬, ৫০৯, এবং আইটি অ্যাক্ট অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ। আইনজীবীদের পরামর্শ, এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের শরণাপন্ন হওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। লাজ-লজ্জার ভয়ে পিছিয়ে এলে দিন দিন এই ধরনের অপরাধীরা আরও সাহস পাবে, বলছেন পুলিশ কর্তারা।
ফেমাস হওয়ার বিকৃত মানসিকতা কি মানুষের বিবেককেই হারিয়ে দিচ্ছে? আপনার কী মনে হয়? জানান কমেন্টে।