আঙুলে এখনও রয়েছে আংটিটা। পরনে জ্যাকেট, পায়ে মোটা ট্রেকিং বুট। প্রায় ২২ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া মার্কিন পর্বতারোহীর দেহ উদ্ধার করলেন পেরুর পুলিশ এবং উদ্ধারকর্মীরা। ২২ বছরে দেহটা অনেকটা যেন মমির রূপ নিয়েছে। কাঠামো প্রায় অবিকৃত অবস্থায়। পেরুর সর্বোচ্চ পর্বতের হিমবাহে এই দেহটি পাওয়া গিয়েছে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হিমবাহ গলছে। আর সেই সময়েই এই পর্বতারোহীর দেহ বেরিয়ে আসে। পরে বহু বছর পুরনো নিখোঁজের তালিকা ঘেঁটে পর্বতারোহীর নাম-পরিচয়ের হদিশ পান উদ্ধারকর্মীরা।
মৃতদেহের গায়ে শীতের ও ট্রেকিংয়ে উপযুক্ত পোশাক ছিল। সেগুলি যেন এখনও নতুন। তাঁর ব্যাগে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও পাসপোর্টও পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি থেকেই জানা যায় যে তিনি আমেরিকান। নাম উইলিয়াম স্ট্যাম্পফ্ল। প্রবল তুষারপাত, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণেই সম্ভবত উইলিয়ামের মৃত্যু হয়েছিল। বরফে চাপা পড়ে যাওয়ায় তিনি আর বের হতে পারেননি ২২ বছর আগের সেই অভিশপ্ত দিনে।
পেরুর সর্বোচ্চ পর্বত হল হুয়াস্কারান(Huascaran)। এটি প্রায় 6,768 মিটার উঁচু। উইলিয়ামের মৃতদেহ গত 5 জুলাই, 5,200 মিটার উচ্চতায় পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে হিমবাহ দ্রুত গলে যাচ্ছে। এই হিমবাহটি অবশ্য এখনই নয়, গত দশ বছর ধরেই একটানা গলছে। ক্রমেই এর আকার কমছে।
হুয়াস্কারান ন্যাশনাল পার্কের রেঞ্জার এডসন রামিরেজ বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি হিমবাহগুলির জন্য মোটেও ভাল নয়। হিমবাহ গলতে থাকলে জলস্তর বেড়ে যাবে। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থানে হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে সেখানে বহু বছর আগে চাপা পড়ে যাওয়া জিনিস এবং প্রাণীও বেরিয়ে আসছে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
একটি রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের গ্রীষ্মমন্ডলীয় হিমবাহের 65 শতাংশই পেরুতে রয়েছে।
পেরুর সরকারের মতে, গত ছয় দশকে তাদের সমস্ত হিমবাহের 56 শতাংশই গলে গিয়েছে। এদেশের বেশিরভাগ হিমবাহই কর্ডিলেরা ব্লাঙ্কায় রয়েছে। এখানেই Huascaran এবং অন্যান্য উচ্চ শৃঙ্গ রয়েছে।
খবরটি হিন্দিতে পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।