রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ২০ জনেরও বেশি পর্যটক আটকে পড়লেন জঙ্গলের মধ্যে। আর এমন পরিস্থিতিতেই গাইড তাঁদের মাঝপথে ফেলে রেখে চলে গেলেন। বিকল সাফারির গাড়ি। চারপাশ ঘুটঘুটে অন্ধকার। বাঘে ভরা অরণ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আতঙ্কে কাঁপলেন নারী পুরুষ ও শিশুরা। পরে ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসল বন দফতর। ঘটনাটি ঘটে শনিবার, রণথম্ভোরের জোন ৬ এ। পর্যটকদের গাড়ি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ঠিক তখনই গাইড মুকেশ কুমার বৈরওয়া তাঁদের ছেড়ে চলে যান। জানান, অন্য গাড়ি আনবেন। কিন্তু আর ফিরে আসেননি।
পর্যটকদের অভিযোগ
পর্যটকদের দাবি, শুধু তাই নয়, তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন ওই গাইড। ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে এক মহিলা বলছেন, 'Aisa phasaya bhaiya aapne. Aapka guide hain kahan?' পিছনে শিশুর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। মুহূর্তেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
রাতের অন্ধকারে দিশেহারা পর্যটকরা
অভিযোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকার জঙ্গলে আটকে থাকেন তাঁরা। আশপাশে শুধু মোবাইলের টর্চের আলো। অথচ এই অরণ্যেই রয়েছে ৬০ র বেশি বাঘ এবং আরও বহু হিংস্র জন্তু। এক আতঙ্কিত পর্যটক কোনওমতে অন্য এক গাড়িতে চেপে পৌঁছন জোন ৬ ফরেস্ট পোস্টে। সাহায্যের আর্জি জানান। কিন্তু সেখানেও বনকর্মীরা নাকি দেরি করেন।
দেরিতে আসে উদ্ধারকারী টিম
অবশেষে বহু চেষ্টার পর আর এক ক্যান্টার গাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু সেটিতেও ছিল না হেডলাইট। মোবাইল টর্চের আলোয় কোনওমতে উদ্ধার করা হয় আটকে পড়া পর্যটকদের।
বন দফতরের বক্তব্য
প্রমোদ কুমার ধাকড়, উপবনসংরক্ষক (পর্যটন), রণথম্ভোর টাইগার প্রোজেক্টের তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়। তিনি জানান, '১৬ অগাস্ট সন্ধ্যার সাফারিতে জোন ৮ এ আরজে২৫পিএ২১৭১ নম্বর ক্যান্টার বিকল হয়ে যায়। গাইড মুকেশ কুমার বৈরওয়া কর্তব্য অনুযায়ী গেটে উপস্থিত ছিলেন না। এর ফলে উদ্ধার কাজে দেরি হয়। তিনি পর্যটকদের জঙ্গলে ফেলে নিজের মতো ফিরে যান। পরে অন্য ক্যান্টার পাঠানো হয়। কিন্তু অন্য ড্রাইভারদের অসহযোগিতার কারণে পর্যটকদের দেরিতে উদ্ধার করা হয়।'
কড়া ব্যবস্থা
তদন্তের পর বড় পদক্ষেপ নেয় বন দফতর। অভিযুক্ত গাইড মুকেশ কুমার বৈরওয়ার সঙ্গে তিন ড্রাইভার, কানহাইয়া (RJ25PA2171), শহজাদ চৌধুরী (RJ25PA2230) এবং লিয়াকত আলি (RJ25PA2227)র আপাতত রণথম্ভোর টাইগার রিজার্ভে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।