লেখিকা সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্ট ঘিরে বিতর্ক। মুঘল সাম্রাজ্যের উপর গোটা অধ্যায় দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের বই থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এনসিইআরটি (NCERT)। তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে দেশজুড়ে। তারইমধ্যে লেখিকা সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্ট সেই বিতর্ককে নতুন মাত্রা দিল। লেখিকার মতে, ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। আর সেজন্য তিনি ধিক্কার দেবেনই। এর আগে জানা গিয়েছিল, দ্বাদশ শ্রেণিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যসূচিতে থাকা মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস বই থেকে সরানো হচ্ছে। তবে সেই তথ্য মিথ্যা বলে জানানো হয়েছে এনসিইআরটির তরফে।
প্যান্টি, রুহ, শঙ্খিনী-র লেখিকার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'যাঁরা মুঘলদের ইতিহাসের eliminationএর বিরুদ্ধে আওয়াজ ওঠাতে গিয়ে মহারাণা প্রতাপকে নিয়ে খিল্লি করছেন তাঁরা কিছু কম গর্দভ নন।
এত রকম গাধা এক সঙ্গে দেখলে বমি পায়।
কোন ইতিহাসই পাল্টানোর এক্তিয়ার কোন শা*লা*র নেই।
সব সত্যি। সব থাকবে।
মুসলিম invasion সত্যি।
মুঘলদের শাসন সত্যি।
মেবারের রাণা প্রতাপের মুঘলদের প্রতিহত করার চেষ্টা সত্যি। তাঁর লড়াই সত্যি।
আদি ভারতবর্ষের ইতিহাস হিন্দুদের ইতিহাস সেটা সত্যি।
মুসলিমদের আগমন সত্যি। তাদের থেকে যাওয়া সত্যি। আজ তাদের অধিকার সত্যি।
এই সব সত্যি নিয়ে আমাদের আজকের জীবন।
ইতিহাসের কোন বিকৃতি দেখলে ধিক্কার দেবই। সেদিন আকবরের বিরুদ্ধে রাণা প্রতাপের লড়াই যদি খিল্লি যোগ্য হয় তাহলে মনে রাখবেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে ক্ষুদিরামও খিল্লি যোগ্য।'
আরও পড়ুন : আজ থেকেই রুট মার্চ, হনুমান জয়ন্তীতে প্রয়োজনে আধাসামরিক বাহিনী; বড় নির্দেশ হাইকোর্টের
এই পোস্ট এখন রীতিমতো ভাইরাল। পোস্ট ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন নেটিজেনরা। যেমন একজন লিখেছেন, 'রাণা প্রতাপের লড়াইকে খিল্লী কে করলো? কোথা থেকে খুঁজে পেলেন? খিল্লী টা একটা সময়ের মূল রাজনৈতিক শক্তিকে মুছে দেওয়া নিয়ে। মুঘলদের বিরুদ্ধেই তো রাণা প্রতাপের লড়াই। তা মুঘলদের মুছে দিলে ইতিহাসে রাণা প্রতাপের লড়াইটা কার সঙ্গে থাকবে? এরকম হাস্যকর চাড্ডিগিরির বিরুদ্ধে খিল্লী করাটাকে রাণা প্রতাপের খিল্লী ধরে নিলেন কি করে?'
তার উত্তরও দিয়েছেন লেখিকা। তাঁর জবাব, 'আপনি যদি #হেরো রাণা প্রতাপকে নিয়ে যে খিল্লিটা শুরু হয়েছে সেটা না দেখে থাকেন তাহলে সেটা আমার সমস্যা নয়। যারা " তাহলে রাণা প্রতাপের লড়াইটা কার সঙ্গে থাকবে" এরকম একটা যুক্তি তৈরি করতে পারেন তাদের লজিককে কুর্নিশ।'
আরও পড়ুন : হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে লাঠি-তরোয়ালে নিষেধাজ্ঞা, আরও কী কী মানতে হবে? কড়া নির্দেশিকা পুলিশের
আর একজন লিখেছেন, 'সত্যি,,,কি যে বলি,,,তাহলে তো তাজমহল কে ও অস্বীকার করতে হয়,,,,সবকিছু নিয়েই তো ইতিহাস।' এর উত্তরে সঙ্গীতা জবাব, 'তাজমহল তাজমহলের জায়গাতেই থাকবে। এরাই আজ বাদে কাল চলে যাবে।' তবে বেশিরভাগ কমেন্টই সঙ্গীতার সমর্থনে এসেছে। লেখিকাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, এর আগেও 'প্যান্টি' উপন্যাস নিয়ে ট্রোলের শিকার হয়েছিলেন লেখিকা। তাঁকে অনেকেই কটাক্ষ করেছিলেন ফেসবুকে। যা নিয়ে প্রতিবাদও জানিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় সঙ্গীতার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অনেক লেখক-লেখিকা।