একটি নিউজ পোর্টাল খুলে, তার আড়ালে অবৈধ কল সেন্টার চালিয়ে প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল একটি দল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেই প্রতারণার ছক ভেস্তে দিল শিলিগুড়ি পুলিশ। শুক্রবার শিলিগুড়ি সেবক রোডের একটি বিল্ডিং এর দোতলায় অভিযান চালিয়ে এই প্রতারণা চক্র ফাঁস করে পুলিশ।
সংবাদমাধ্যমের ছদ্মবেশে কল সেন্টার খুলে প্রতারণা
দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কল সেন্টারটি চলছিল বলে খবর মিলেছে। এর আগেও শিলিগুড়িতে একাধিক কল সেন্টারের আড়ালে প্রতারণার ছক ভেস্তে দিয়েছিল পুলিশ। মাঝে কিছুদিন থমকে থাকলেও ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এগুলি। সামনে সংবাদমাধ্যমের বোর্ড লাগানো থাকায় দীর্ঘদিন তারা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে তা চালিয়ে গিয়েছে। যদিও শেষমেষ খবর পেতেই এদিন শিলিগুড়ি পুলিশের ডিরেক্টেড ডিপার্টমেন্ট এবং স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ যৌথভাবে হানা দেয় কল সেন্টারটিতে। ছিলেন ডিডির এসিপি রাজেন ছেত্রী। সেখান থেকে কল সেন্টারের মালিক সহ ৬ জন পুরুষ এবং আরও ২১ জন মহিলা কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। মোট ২৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
অপ্রতিরোধ্য বেআইনি কল সেন্টার মালিকরা
শিলিগুড়িতে গত কয়েক বছর ধরে কখনও পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কখনও পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা রেখে কল সেন্টার চালিয়ে গিয়েছে অপ্রতিরোধ্য অবৈধ কল সেন্টারগুলি। পুলিশের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে চলছে অবৈধ প্রতারণার কারবার। একের পর এক সেন্টারে হানা দিলেও বাগে আনা যাচ্ছে না। শুক্রবারও এমন এক কল সেন্টারের নামে প্রতারণা চক্রে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
কল সেন্টারের আড়ালে ফ্রেন্ডশিপ ক্লাব
কল সেন্টার আসলে ফাঁদ। কলসেন্টারের আড়ালে চলে ফ্রেন্ডশিপ ক্লাব। কী হয় সেখানে? বিভিন্ন ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবের আড়ালে চলে প্রতারণা চক্র। ওয়েবসাইট তৈরি করে কখনও বন্ধু চাই, কখনও ম্যাসাজের জন্য লোক চাই, কখনও ম্যাসাজ করানোর জন্য বিজ্ঞাপন আবার কখনও বডি ম্যাসাজ কর্মী চাই বলে ছক তৈরি করে বিজ্ঞাপন দেওয়া থাকে। প্রলোভনে পা দিয়ে ফোন করলেই হয়ে গেল। ফোনের এপারে থাকা মহিলাদের দুষ্টু-মিষ্টি কথায় ভুলে আপনি ৪-৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে, লাখ, দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত খোয়ানোর নজির রয়েছে।
ভিন রাজ্যেই প্রতারণা হয় বেশি
এই ওয়েবসাইটগুলি শিলিগুড়ি-কলকাতা বা এ রাজ্যে থাকলেও প্রতারণার জাল বিছানো হয় তেলেঙ্গানা, হায়দরাবাদ, কর্ণাটকের মতো দূরেরর রাজ্যগুলিতে। তাতে বেশিরভাগ সময়ই অনেকেই অভিযোগ নিয়ে জায়গামতো পৌঁছতে পারে না। আবার কাজটাই এমন, টাকা খোয়া গেলেও অনেকে স্বীকার করতে পারেন না, কোথায় টাকা খুইয়েছেন। ফলে ফুলে-ফেঁপে ওঠে প্রতারকরা।
এর আগেও শতাধিক কলসেন্টার বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ
শিলিগুড়িতে এর আগে কয়েকশো কল সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ না থাকায় প্রতারকরা ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। আবার পরে অন্য কোথাও একই ব্যবসা খুলে রমরমিয়ে চলছে ব্যবসা। এর আগে তেলেঙ্গানার একটি পুলিশের দল এসে অভিযান চালিয়ে প্রতারণার ছক ভেঙে দেয়। অনেককে গ্রেফতার করেও নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর পুলিশ নড়েচড়ে বসলেই আবার সব থিতিয়ে যেতেই জায়গা বদলে কল সেন্টার সক্রিয় হচ্ছে শহরে।