Advertisement

ওঁরা এখন মণ্ডপে যান, দুর্গার উপর রাগ খানিক কমেছে মহিষাসুরের বংশধরদের

জাতিতে হিন্দু হলেও তাঁদের রীতিগত বিশ্বাস অনুযায়ী তাঁরা মহিষাসুরের বংশধর। তাই গোটা দেশ যখন দুর্গাপুজোয় মেতে থাকেন, তখন ওঁরা দূরে থাকেন। যদিও ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যেও রীতি বদলাচ্ছে। ওঁরা এখন মণ্ডপে যান, দুর্গার উপর রাগও খানিক কমেছে মহিষাসুরের বংশধরদের।

অসুর সম্প্রদায়
Aajtak Bangla
  • শিলিগুড়ি,
  • 01 Sep 2022,
  • अपडेटेड 10:13 PM IST
  • মহিষাসুরের পুজো করেন উত্তরবঙ্গের এই সম্প্রদায়
  • দুর্গা তাদের কাছে ব্রাত্যই
  • পাশাপাশি দুর্গার থেকে আড়াল খোঁজেন তাঁরা

"এসেছে শরৎ, হিমের পরশ, লেগেছে হাওয়ার পরে"। বাঙালির কাছে এই অনুভব মানেই শারদোৎসবের সূচনা হয়ে যায় মনে মনে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের গোটা এলাকার মানুষ পুজোর আনন্দে মেতে ওঠে। এমনকী হিন্দুদের সঙ্গে উৎসবে শামিল হয় অন্য ধর্মাবলম্বী ভাই-বোনেরাও।গোটা জাতি যখন পুজোর আমেজ গায়ে মাখতে আর দুর্গাপুজোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকেন, তখন বাংলারই উত্তর অংশের একটা জনগোষ্ঠী দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি থেকে আড়াল করে রাখেন নিজেদের। শুধু আড়ালই নয়, মা-দুর্গার মুখ যেন দেখতে না হয়, তাই বাড়ির চারপাশ কালো কাপড়ে ঢেকে রাখে। তাঁদের বিশ্বাস, মহিষাসুর তাঁদের পূর্বপুরুষ। যেহেতু দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে হত্যা করেছেন, তাই তাঁরা দেবীর মুখদর্শন করেন না। এটাই রীতি। বরং তাঁরা মহিষাসুরকেই পুজো করেন। তাঁদের আরাধ্য তিনিই।

আরও পড়ুনঃ Skin Glow At Home: এই ফেসপ্যাক রাতে মুখে লাগান, সকালে গ্ল্যামার ফেটে পড়বে

মহিষাসুরের বংশধর

অসুর সম্প্রদায়ের প্রবীন মানুষেরা বিশ্বাস করেন, তাঁরা মহিষাসুরের বংশধর। মহিষাসুর তাঁদের পূর্বপুরুষ। মা দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছেন। তাই তাঁরা দুর্গাপুজোয় অংশ নেন না। বরং ওই সময় তাঁরা শোকদিবস পালন করে এসেছেন। পুজোর দিনগুলোয় তাঁরা বাড়ির চারপাশটা কালো কাপড়ে ঢেকে রাখতেন। কিন্তু এখন সেই ধ্যানধারনার খানিক পরিবর্তন ঘটছে। গোঁড়ামি আর নেই। বরং অনেকটাই খোলামেলা।

অসুরদের নিবাস কোথায়?

ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকায় অসুরদের দেখা মেলে। উত্তরবঙ্গের চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় এইসব অসুর সম্প্রদায়ের ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। এদের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। তাঁরা বিক্ষিপ্তভাবে বসবাস করেন উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং দার্জিলিং জেলার চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায়। ছোটনাগপুরের মালভূমি অঞ্চল, গুলমা ও লোহারডাঙা জেলায় এদের বসবাস। বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় এরা উত্তরবঙ্গে আসে বলে জানা গিয়েছে। মূলত হিন্দি, সাদ্‌রি ভাষাতেই কথা বলেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গের মধ্যে জলপাইগুড়িতেই এঁরা বেশি থাকেন।

Advertisement

আরও পড়ুনঃ স্কুলে ৭৬ জন ছাত্র-ছাত্রী প্রায় একই রকম দেখতে, গুলিয়ে ফেলেন শিক্ষকরা

জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা ব্লকের ক্যারন চা-বাগান, আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাব্‌রি চা-বাগান অঞ্চলে বেশি লোক থাকেন। অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো এদেরও রয়েছে জীবন ও সমাজকে ঘিরে কিছু নির্দিষ্ট নিয়মরীতি। হিন্দু ধর্মের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় অনেকটাই। রয়েছে শিশু জন্মের কিছু আচার-পদ্ধতির পাশপাশি পারলৌকিক অশৌচমুক্ত আচার–পদ্ধতিও।

‘এই অসুর সম্প্রদায় কিন্তু হিন্দুই। তবু এই নিয়ম ও রীতি যুগযুগান্তর থেকে পালন করে আসছেন তাঁরা। যদিও গত কিছু বছরে নিয়ম-কানুনের পাট অনেকটাই শিথিল হয়েছে। আগের মতো বাঁধন নেই। তাই কিছু কিছু নবীন প্রজন্মকে পুজোর প্যান্ডেলে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। পাশাপাশি আগে হিন্দু সংখ্যাধিক্য থাকলেও বর্তমানে অনেকে খ্রীষ্ট ও বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছেন। ফলে তাঁরা মহিষাসুরের মিথ ভেঙে সব ধরণের উৎসবে শামিল হন তাঁরা। তবে পুজোর অনুষ্ঠানে এখনও সরাসরি অংশ নেন না।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement