অতুল রায় চলে গেলেন
কামতাপুর আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাণপুরুষ অতুল রায় প্রয়াত হলেন। তিনি মারা যাওয়ার সঙ্গেই কামতাপুর আন্দোলনের একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটল। তাঁর প্রয়াণের খবরে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে সমস্ত বিরোধী দলের নেতারাই। এমনকী বিরোধী ও পুরনো সঙ্গীরাও শোকপ্রকাশ করেছেন।
ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে ভুগছিলেন
বেশ কিছুদিন ধরেই শিলিগুড়ির একটি হাসপাতালে ভরতি ছিলেন অতুল রায়। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ছিল। গত ২২ মে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। দু'সপ্তাহের বেশি নার্সিংহোমে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত হাসপাতালেই বুধবার মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।
মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্যদের শোকজ্ঞাপন
তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে শোকবার্তায় তিনি জানান, 'অতুল রায়ের প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত। যিনি কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমির সহ-চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর পরিবার ও অনুরাগীদের সমবেদনা জানাচ্ছি। উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য তাঁর একনিষ্ঠ এবং লাগাতার লড়াই সর্বদা আমাদের স্মরণে থাকবে।'
অতুল রায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য অশোক ভট্টাচার্য। হাসপাতালে অতুলবাবুর মরদেহে শ্রদ্ধা জানাতে জান প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর মৃত্যুতে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা নিখিল রায়ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজবংশী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বিজেপির বিধায়ক আনন্দময় বর্মনও তাঁর মৃত্যুকে অপূরণীয় ক্ষতি বলে বর্ণনা করেছেন।
কামতাপুর ধারণা প্রকাশে পুরোধা ছিলেন অতুল
কামতাপুর ধারণার জন্মদাতা ছিলেন অতুলবাবু। পৃথক কামতাপুর রাজ্য গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরুর পুরোধা ছিলেন তিনিই। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী থেকে পুরোদস্তুর রাজনীতিতে পা রাখেন। শুরুর সময় কামতাপুর পিপলস পার্টিতে থেকে আন্দোলন শুরু করেন।পরবর্তী সময়ে দলের অন্যদের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হলে বেরিয়ে আসেন অতুল। গঠন করেন কামতাপুরি প্রোগ্রেসিভ পার্টি। বামফ্রন্ট সরকারের তীব্র বিরোধী ছিলেন অতুল। পরবর্তীকালে আবার দুটি দল মিশে যায়। পরে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। যা জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত ছিল। তাঁকে রাজবংশি ভাষা অ্যাকাডেমির ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়।