Advertisement

বক্সায় হাতি তাড়াতে নিষিদ্ধ শব্দবাজিই ভরসা বনদফতরের, দালালদের শরণাপন্ন

গ্রামে হাতি তাড়াতে গ্রামবাসীদের মশালের সাথে এখন শব্দ বাজির ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে বক্সা টাইগার রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ। আইনত ব্যানড হলেও প্রচুর শব্দবাজি যোগান দিতে নিষিদ্ধ বাজি কিনছে বন দফতর।

হাতি তাড়াতে পটকাই ভরসা
অসীম দত্ত
  • আলিপুরদুয়ার,
  • 17 Jan 2022,
  • अपडेटेड 5:08 PM IST
  • নিষিদ্ধ শব্দবাজিই ভরসা বন দফতরের
  • হাতি তাড়াতে বাজি ছাড়া উপায় নেই
  • প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও এটাই বাস্তব

গ্রামে হাতির হামলা ঠেকাতে এবার বনদপ্তর অবৈধ শব্দবাজি কারবারিদের শরণাপন্ন। গ্রাম থেকে হাতি তাড়াতে পরিবেশ এবং শব্দ দূষণ রোধে আইনগত ভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দেওয়া সেই শব্দ বাজিই এখন বনদপ্তরের তুরুপের তাস।

আর সেই কারণেই নিষিদ্ধ  শব্দবাজির জোগান পেতে শব্দবাজির দালালদের হাত ধরেছে বক্সার বনদপ্তর।
বেশ কয়েক বছর ধরে বুনো হাতিদের চরিত্রে বদল এসেছে। আগে গ্রামে হাতি ঢুকলেই গ্রামবাসীদের মশালের আগুনে তাড়া খেয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যেত বক্সার দামালদের দল।

মশালের আগুন হাতিদের কাছে এখন ডোন্ট কেয়ার। বরং মশালের আগুন দেখলেই গ্রামবাসীদের পাল্টা তাড়া করে হাতির দল। হাতির পাল্টা হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনায় বেশ কিছু গ্রামের মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।অনেকেই আবার হাতির হানায় জখম হয়ে চিরকালের জন্য পঙ্গু হয়ে ঘরে পড়ে আছেন।

তাই গ্রামে হাতি তাড়াতে গ্রামবাসীদের মশালের সাথে এখন শব্দ বাজির ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছে বক্সা টাইগার রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিষিদ্ধ শব্দবাজি গ্রামের মানুষ কোথা থেকে পাবেন।এবং প্রতিদিন ৭০-১০০ টাকা দামের  এক প্যাকেট  শব্দ বাজি কেনার মতো সামর্থ্য নেই গ্রামবাসীদের। গ্রামবাসীদের এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে বনদপ্তরের রেঞ্জ এবং বিট অফিস গুলো।এই রেঞ্জ এবং বিট অফিস গুলোই নিষিদ্ধ শব্দবাজি নিজেরাই ক্রয় করছেন কালোবাজারিদের থেকে। এবং সেই শব্দবাজিই তুলে দেওয়া হচ্ছে গ্রামের মানুষদের।  এই শব্দবাজির দৌলতেই কৌশলে একঢিলে দুই পাখি মারছে বনদপ্তর।

একদিকে যেমন গ্রামে হাতি ঢুকলে বনকর্মীদের রাতবিরেত গ্রামে ছুটে যেতে হয়না। অন্যদিকে হাতির হামলায় গ্রামবাসীর মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমে যাওয়াতে বনদপ্তরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে না। ফলে প্রতিবছর বনদপ্তরের কয়েক লাখ টাকা বেঁচে যাচ্ছে। রাজ্যের নিয়মে ৯০ ডেসিবেলের উপর শব্দ মানেই তা বিপদসীমার উপর। আর তার উপর নির্ভর করে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে বেশ কিছু শব্দবাজি।সেই তালিকায় হাতিতাড়াতে যে পটকা বা চকোলেট বোম ব্যবহার করা হয় সেটিও রয়েছে।কিন্তু ঘুরপথে বা লুকিয়ে ওই নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হয় বিভিন্ন বাজারে।

Advertisement

নিয়ম ভাঙলে জরিমানা তো বটেই এমনকি জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার পর্যন্ত হতে পারেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই।কিন্তু সরকারি এত নিয়ম থাকলেও বনদফতরকে রীতিমত নিরুপায় হয়েই সেই বাজি কিনতে হয়। বনদপ্তর এর এক কর্তা জানান,হাতি তাড়াতে যে বাজি  ফাটানো হয় সেটা বাজি তা আমাদের জানা। কিন্তু  হাতি তাড়াতে ওই বাজি ছাড়া কোনও উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়েই সেই বাজি আমাদেরকে কিনতে হয়।

বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে,বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব এবং পশ্চিম ডিভিশনে ১৪ টি রেঞ্জ রয়েছে প্রতিটি রেঞ্জে প্রতি মাসে অন্তত ২৪০ ডজন করে বাজি কিনতে হয়। সেই হিসাব ধরলে দুটি ডিভিশনে মিলিয়ে প্রতিমাসে অন্তত এক লক্ষ টাকার বাজি কিনতে হয়। বক্সা টাইগার রিজার্ভের এফডি বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন ঘটনাটি আমার জানা নেই। তাই এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না।

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement