রবিবার পাঁচদিনের দার্জিলিং সফরে আসতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে প্রশাসনিক স্তরে শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা। সরকারিভাবে তাঁর সূচি নিয়ে দলীয় নেতারা মুখ না খুললেও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির গোঁসাইপুরে মুখ্যমন্ত্রী যোগদান করবেন সরকারি অনুষ্ঠানে। এরপর পাহাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি। গোসাইপুর জোর কদমে চলছে সভামঞ্চের প্রস্তুতির কাজ। মুখ্যমন্ত্রী এবারের সকল প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচনে তৃণমূল এককভাবে বোর্ড গঠন করার পর এবার দ্বিতীয় বার শিলিগুড়িতে সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এবারের সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনিক সূত্রে খবর রবিবার দুপুর ৩ টা ৫ মিনিট নাগাদ তিনি শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি শিলিগুড়ির গোঁসাইপুরে মাঠে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। জানা গিয়েছে এই অনুষ্ঠানে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা সরাসরি প্রাপকের হাতে তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই এই অনুষ্ঠান সেরে সড়কপথে সরাসরি পাহাড়ে উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন তিনি।
জানা গিয়েছে দার্জিলিঙে পৌঁছে রিচমন্ড হিলে তিনি থাকতে পারেন। এরপর ২৮ শে মার্চ তিনি পাহাড়ে থাকবেন। তবে ২৯ শে মার্চ দার্জিলিংয়ের ম্যালে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন। জানুয়ারি ৩০ তারিখে তিনি পাহাড়ে থাকবেন। এরপর ৩১ তারিখ দুপুরে দার্জিলিংয়ের রিচমন্ড হিল থেকে রওনা দিয়ে শিলিগুড়িতে পৌঁছবেন। জানা গিয়েছে রাতে শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যায় রাজ্য সরকারের অতিথিশালা কন্যাশ্রীতে রাত্রি যাপন করবেন তিনি। এরপর ১ তারিখ দুপুরে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে কলকাতা ফিরে যাবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এবারের দার্জিলিং সফর প্রশাসনিক ভাবে যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি রাজনৈতিকভাবেও মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষ ওয়াকিবহাল মহল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে শিলিগুড়ি পুরভোটের ক্ষমতা দখল করার পর মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন শিলিগুড়িবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছিলেন। তাই এবারের এই সরকারই অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী শহরবাসীকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পগুলি সুবিধা মানুষকে তুলে দিয়ে শিলিগুড়িবাসীর মন জয় করার চেষ্টা করবেন।
তাছাড়াও এবার মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ সামনেই জিটিএ নির্বাচন এবং পাহাড়ের বাকি তিনটি পুরসভা নির্বাচন রয়েছে। সম্প্রতি দার্জিলিং পৌরসভা নির্বাচনে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে জোট করে আশানুরূপ ফল হয়নি। দার্জিলিং পৌরসভা একক ভাবে দখল করেছে অজয় এডওয়ার্ডয়ের দল হামরো পার্টি। তাই জিটিএ নির্বাচনের আগে পাহাড়ের বন্ধু দলগুলিকে একত্রিত করতে মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের ধারণা।
সূত্রের খবর দার্জিলিং পৌরসভা নির্বাচনে অনিতের দলের সাথে জোট করতে চেয়েছিল ঘাসফুল শিবির। তবে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। ফলে অনিতের দলও একা লড়ে বোর্ডের দখল নিতে পারেনি। তাই জিটিএ নির্বাচনে নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে এবার তৃণমূলের সাথে জোট করতে পারে। তাই মুখ্যমন্ত্রী এই সফরে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অন্যদিকে দার্জিলিং পৌরসভা নির্বাচনে বিজয়ী কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করতে পারেন তিনি।