দাবি পূরণের দাবি বিমল গুরুংয়ের
সামনেই জিটিএ নির্বাচন। তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তার আগে ফের বাজার গরম পাহাড়ে। দার্জিলিং পাহাড়ের রাজনীতিতে পাকাপাকি সমাধান চাই বলে দাবি করে তিনি চিঠি লিখলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। পাশাপাশি সমাধানে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক চেয়েছেন বিমল গুরুং। তাঁর দাবি, ''১১টি গোর্খা জাতিকে SC তকমা না দেওয়া হলে তা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হিসেবেই ধরতে হবে।'' GTA নির্বাচনের আগে এই প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবি জানিয়েছে মোর্চা।
কী রয়েছে চিঠিতে?
মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে যে চুক্তি হয়েছিল, সেই অনুযায়ী স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে। জিটিএ-কে আরও বেশি ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সঙ্গে গোর্খা অধ্যুষিত উত্তরবঙ্গের ৩৯৬টি মৌজাকে জিটিএ’র অধীনে আনার দাবিও রেখেছেন তিনি।
২০১৭ সালে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মসনদ খোয়ান বিমল
এর আগে ২০১৭ সালে বাংলা ভাষাকে বাধ্যতামূলক করা এবং জিটিএ-র বিভিন্ন দফতরকে ক্ষমতাহীন করে রাখা হয়েছে দাবি তুলে অসহযোগিতা ও বিদ্রোহের পথে গিয়েছিল বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ছেড়ে দেন জিটিএ-এর সমস্ত পদও। তারপর থেকেই ধারাবাহিক হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। একাধিক মামলা, দেশদ্রোহিতার মামলায় জড়িয়ে পাহাড় থেকে পালিয়ে যান বিমল ও তার সঙ্গীরা।
বিনয়-অনিতদের উত্থান
এরপরই রাজ্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জিটিএ চালান এক সময় তাঁর অনুগামী বিনয় তামাং ও অনিত থাপা। অভিযোগ ওঠে বিজেপির আশ্রয়ে দিল্লিতে লুকিয়ে ছিলেন বিমল-রোশনরা। এরপর ২০২১ এ ফের রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে পাহাড়ে ফেরেন বিমল। কিন্তু ততদিনে পাহাড়ে বিমল ম্যাজিক মুছে গিয়েছে। পরপর দুটি নির্বাচনে তাদের হতাশাজনক ফলাফল কফিনে শেষ পেরেকটিও পুঁতে দেয়। শেষ দার্জিলিং পুরসভা নির্বাচনে বিমলদের ল্যাজেগোবরে হওয়ার পর আর কিছু অবশিষ্ট নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিমলদের সরিয়ে নতুন দল হামরো পার্টি সামনের সারিতে চলে আসে।
বিমলদের নতুন দাবি
এদিকে, বর্তমানে বিমল গুরুংদের দাবি, ২০১১ সালের চুক্তি অনুযায়ী, রাজ্য সরকার যা ক্ষমতা জিটিএ-এর হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তার অধিকাংশই এখনও জিটিএ-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। সেই সব ক্ষমতা আগে জিটিএ-এর হাতে তুলে দেওয়া হোক। তারপরই যেন জিটিএ নির্বাচন হয়।
চিঠিতে বিমল গুরুং লিখেছেন, তিনি বা তাঁর দল এখন আর BJP-র সঙ্গী নন। তাঁরা এখন তৃণমূলের জোটসঙ্গী। তাই তৃণমূল যেন এই জোট সম্পর্ক বজায় রাখে এবং জিটিএ নির্বাচন এখনই না করিয়ে আগে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করার দিকে নজর দেয়। যেন তেন প্রকারে পাহাড়ে প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনতে চাইছে তারা।
জুনেই গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (GTA) নির্বাচন
আগামী জুনেই গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (GTA) নির্বাচন হতে পারে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। এই মর্মে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আর এই আলোচনার পরই জুন মাসেই GTA নির্বাচনের হওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। GTA-র পাশাপাশি হতে পারে শিলিগুড়ির মহকুমা পরিষদ নির্বাচনও।