পাহাড়ে নতুন বাঁক
পাহাড়ের রাজনৈতিক আবহাওয়ায় ফের বাঁক। নতুন করে হাওয়াবদলের ইঙ্গিত। ৪ মাস আগে বিমল গুরুং গোষ্ঠীর সঙ্গ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া ত্রিলোকচাঁদ রোকা এবার অনিত থাপার সঙ্গে।
চার মাসেই মোহভঙ্গ বিজেপিতে
চার মাসেই বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ তাঁর। গেরুয়া শিবিরের সঙ্গ ছেড়ে ফের তিনি অনি থাপা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিলেন। মাত্র কিছুদিন আগেই নিজের তৈরি দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিনয় তামাং। ফলে এখন সর্বেসর্বা অনিতই। পুরনো প্রভাবশালী নেতাকে ফিরে পেয়ে খুশি অনিতও। এক সময়ের বিমল গুরুংয়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দার্জিলিংয়ের চা শ্রমিক নেতা দলে প্রভাবশালী দায়িত্ব পাবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিজেপি সাংসদ পাহাড় নিয়ে নীরব
পৃথক রাজ্যের দাবিতে গোর্খাল্যান্ডের ইস্যু নিয়ে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার নীরবতার কারণেই তিনি বিজেপি ছাড়লেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আগামী রবিবার দার্জিলিঙে অনশন কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে অখিল ভারতীয় গোর্খালিগ। বিমল গুরুংও একই ইস্যুতে বিজেপির হাত ছেড়েছিলেন। এবার ত্রিলোকচাঁদ রোকাও একই দাবিতে বিদ্রোহ করলেন।
প্রথম থেকেই বিমলের মোর্চায়
২০০৭ সালে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট বা জিএনএলএফ ছেড়ে বিমল গুরুং যখন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা স্থাপন করলেন, প্রথম দিন থেকেই তিনি বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে ছিলেন। প্রথম থেকেই দলের শ্রমিক সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা তিনি। নিজে ছিলেন শ্রমিক নেতা, তাই চা শ্রমিকদের সমস্যা তিনি ভালো বুঝতেন।
বিমল থেকে বিজেপি
বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের পাশাপাশি ২০১৭তে ত্রিলোকচাঁদ রোকা নামে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল পুলিশের তরফে। বিমল গুরুংয়ের সঙ্গেই সেগুলোর অনেকগুলি থেকেই অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি। বিমল গুরুং ফিরে আসার পর তাঁর সঙ্গেই ছিলেন ত্রিলোকচাঁদ রোকা। কিন্তু কিছুদিন পর বিমলের সঙ্গে মত পার্থক্যের জেরে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন।
বিমলে আর না, অনিত ভাল
কিন্তু বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে তিনি দল ছাড়লেও বিমলের সঙ্গে আর ফিরে যাননি। হাত মেলালেন অনিত থাপার সঙ্গে। তিনি বলেন, বিজেপিকে পাহাড়ের মানুষ সব কিছু দিয়েছে। তিনবার সাংসদ পাঠিয়েছে এখান থেকে। কিন্তু বিজেপি পাহাড়কে কিছুই ফেরত দেয়নি। না গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলেছে, না ১১ জাতিগোষ্ঠীকে তপশিলি উপজাতি মর্যাদা দিয়েছে। বিজেপি সরকারের উচিৎ কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার।
রাজ্যের সঙ্গেই থাকবেন
তিলক রোকা বলেন, পাহাড়ের উন্নয়ন করতে হলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যাওয়া চলবে না। আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে রয়েছি। তাই অনিতের সঙ্গে যোগ দিলাম। অন্যদিকে ১১ জনজাতি এবং পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি না তোলায় আগামী রবিবার পাহাড়ে অনশনে বসার হুমকি দিয়েছে অখিল ভারতীয় গোর্খালিগ। যদিও পুলিশ অনুমতি দেয়নি, তবুও তারা অনুসরণ করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।