টানা ধসে বিপর্যস্ত পাহাড় (Hill)। কখনও ধসে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে সিকিমের (Sikkim) রাস্তা, কখনও সেবকে (Sevok) ধস নেমে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে যোগাযোগ। দার্জিলিং (Darjeeling) পাহাড়ের কাছে গয়াবাড়ি-রংটং (Gayabari-Rongtong Road) রোড বরাবরই ধস প্রবণ (Landslide Pron)। কয়েক বছর আগে পাগলাঝোরার (Paglajhora) কাছে ধস নেমে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল টয়ট্রেনের (Toytrain) লাইন। তারপরও বারবার ধস (Landslide) নেমেছে। ফলে বর্ষার (Monsoon) এই সময় পাহাড়ে যাওয়া বিপজ্জনক (Dangerous) বলে মনে করেন অধিকাংশ পর্যটকই (Toursit)। তবে অনেকেই বিকল্প রাস্তা (Alternative Route) জানেন না। তাই ভয় পান। একই বা কম খরচে একাধিক রুট আছে শৈলশহরে (Hill City) পৌঁছনোর। যা অনেকটাই সেফ। এই রাস্তাগুলির ধসের রেকর্ড তেমন নেই।
বিশেষজ্ঞদের মত কী?
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক' (HHTDN) এর সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানিয়েছেন, বর্ষায় ধস নামলেও, পর্যটকদের জন্য কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, কারণ শিলিগুড়ি (Siliguri) থেকে পাহাড়ে ওঠার প্রতিটি জায়গার জন্য একাধিক রাস্তা রয়েছে (More Than One Route)। যা ধরে অনায়াসে চলে যাওয়া যায়, বিকল্প রুটে। দার্জিলিং (Darjeeling), কার্শিয়াং (Kursong), কালিম্পং (Kalimpong), মিরিক (Mirik), গ্যাংটক (Gangtok), জোরথাং (Jorethang) যেতে একটি নির্দিষ্ট রাস্তার উপর নির্ভর করতে হয় না।
প্রতিটি রাস্তাই কমবেশি একই দূরত্বের
আর সবচেয়ে মজার কথা, শিলিগুড়ি থেকে আগে থেকে জেনে রওনা হলে সবগুলিই কমবেশি একই দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। একটি রাস্তার চেয়ে অন্য রাস্তার দূরত্বের পার্থক্য ১০-১৫ কিলোমিটারের বেশি নয়।
শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ে ওঠার বিকল্প পথ
শিলিগুড়ি শহরের প্রধান দুটি রাস্তা হিলকার্ট রোড ও সেবক রোড। মজা হল, এই দুটি রাস্তা ধরে যদি বরাবর যাওয়া যায়, শহর, জঙ্গল ছাড়িয়ে তা পাহাড়েই গিয়ে শেষ হয়। দুটি আলাদা দিক থেকে পাহাড়ে উঠলেও পাহাড়ে গিয়েও দুটি রাস্তার মধ্যে একাধিক পকেট রুট থেকেই পাহাড়ে গিয়েও একটি আরেকটির মধ্যে গিয়ে মেশে।হিলকার্ট রোড সোজা গিয়ে শেষ হয়েছে দার্জিলিংয়ে। আর সেবক রোড শিলিগুড়ি থেকে শুরু করে সেবকে গিয়ে দুটি জাতীয় সড়কের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। একটি ডুয়ার্সে হয়ে পাহাড়ে গিয়েছে। আর একটা সরাসরি পাহাড়ে চলে গিয়েছে।
দার্জিলিং যাওয়ার বিকল্প রুট
ধস এড়িয়ে নিরাপদে দার্জিলিং পৌঁছনোর জন্য রয়েছে ৩টি পথ। সাধারণ পর্যটকেরা এনএইচ ৫৫ ধরে রোহিণী রোড হয়ে দার্জিলিং পৌঁছন। এই পথটি বাদ দিলে পড়ে থাকে এনএইচ ১০ হয়ে মংপু হয়ে দার্জিলিং; এনএইচ ১০ হয়ে পেশক হয়ে দার্জিলিং; শিলিগুড়ি থেকে পাঙ্খাবাড়ি হয়ে দার্জিলিং বা শিলিগুড়ি থেকে ভায়া মিরিক দার্জিলিং। এই তিন রুটের মধ্যে একমাত্র মিরিক রুটে গেলে ভাড়া একটু বেশি পড়ে; না হলে ৭০০-৮০০ টাকাতেই গাড়ি বুক করা যায়; ২০০-২৫০ টাকা জনপ্রতি পড়ে।'
সিকিম যাওয়ার পথ
শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যাওয়ার জন্য রয়েছে অন্তত দুটি বিকল্প পথ। শিলিগুড়ি হয়ে রোহিণী রোড হয়ে ভায়া কার্শিয়াং জোড়বাংলা, সেখান থেকে সিকিম। আর একটি পথ হল ডুয়ার্স-গরুবাথান হয়ে লাভা হয়ে সিকিম। এ দুটি পথে ধসের ভয় অনেকটাই কম। ভাড়াও খুব বেশি পড়ে না।
সিকিমে তবু ভয়, দার্জিলিং-কার্শিয়াং-কালিম্পংয়ে নয়
সিকিমের গ্যাংটকে তেমন ভয় নেই। উত্তর সিকিমটা বর্ষায় এড়ানো গেলে ভাল। বাকি এ রাজ্যের পর্যটনকেন্দ্রগুলি একেবারে নিরাপদ। বিকল্প রুটও যেমন আছে, তেমনই খরচও বাড়ছে না। তবে বর্ষায় ঘুরতে এলে বাড়তি কয়েকদিন হাতে নিয়ে আসলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না বলেই জানিয়েছেন সম্রাট সান্যালরা।