Advertisement

ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল যৌতুকের স্বপ্ন, অসহায় বাবার মান বাঁচালেন সঞ্জয় দত্ত

আধ ঘন্টার ঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছিল ঘর। টিনের চালের উপর গাছ পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বিয়ের জন্য এনে রাখা শোকেস, টিভি। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিয়ে। কীভাবে ব্যবস্থা হবে বুঝতে পারছিলেন না অসহায় বাবা বৈদ্যনাথ রায়। রাজনৈতিক নেতারা এলেও নির্বাচনী বিধি ভেঙে সাহায্য করা সম্ভব নয় জানিয়েছিলেন। বরাবরের মতো ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন এলাকার বনবিভাগের রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত।

মেয়েরা বাবা বৈদ্যনাথ রায়মেয়েরা বাবা বৈদ্যনাথ রায়
সংগ্রাম সিংহরায়
  • শিলিগুড়ি,
  • 23 Apr 2021,
  • अपडेटेड 9:04 PM IST
  • মান বাঁচালেন রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত
  • কালবৈশাখীতে নষ্ট হয়েছিল যৌতুকের টিভি, শোকেস
  • আবেগাক্রান্ত মেয়ে, বাবা

রাত পোহালেই মেয়ের বিয়ে। দিনমজুর সংসারে যেটুকু আয়োজন করা দরকার তা মোটামুটি সারা। পরিস্থিতি যাই হোক, আত্মীয়-স্বজন আসবে না বিয়েতে, তা কি হয়? তাই দরমার বেড়ার উপর টিনের চাল দেওয়া এক চিলতে বাড়িতে তাঁরাও এসেছেন বাড়ির মেয়ের বিয়েতে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। সকালবেলায় হই হই, রই রই চলছিল বাড়ি জুড়ে। আধঘণ্টার কালবৈশাখী এক ঝটকায় উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল সমস্ত স্বপ্ন।

কালবৈশাখী

কালবৈশাখীতে গাছ পড়ে ভেঙে যায় টিনের পলকা চাল। সেই সঙ্গে প্রায় তৈরি হয়ে যাওয়া প্যান্ডেল ভেঙে তছনছ। আলমারি, টিভি নতুন কিনে রাখা হয়েছিল যৌতুক হিসেবে মেয়েকে দেওয়া হবে বলে। তা ভেঙে চুরমার। অথচ শনিবারই বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা মেয়ে সঙ্গীতার। ফুলবাড়ির বাসিন্দা বৈদ্যনাথ রায়কে আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন অনেকেই। তবে নির্বাচনী বিধি ভাঙবে বলে এখন কেউ সাহায্য করবে না বলে জানিয়েছেন।

ত্রাতা সঞ্জয় দত্ত

সব শুনে শনিবারের বিয়ে কীভাবে পার করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না না বৈদ্যনাথবাবু। শেষমেষ ফরেস্ট রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত আরও একবার এগিয়ে এলেন। তিনি নিজের পয়সায় গাছ পড়ে ভেঙে যাওয়া টিভি ও শোকেস কিনে এনে দেন। মূলত তাঁরই উদ্যোগে মেয়ের বিয়েতে মাথা উঁচু করে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সামনে দাঁড়াতে পারছেন তিনি।

আরও পড়ুন

অভাবের পরিবার

জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের ফুলবাড়ি এলাকার জামুরিভিটায় গত প্রায় বছর খানেক ধরে মেয়ের বিয়ের জন্য সামগ্রী জোগাড় করছিলেন। এর ওর কাছে সাহায্য নিয়ে হাত পেতে কোনওমতে মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ছিল ম লা পরিষদের সদস্য দেবাশীষ প্রামাণিক সহ আরও কয়েকজন তাদের বাড়িতে গেলেও নির্বাচনী বিধি থাকায় এখন সাহায্য করতে পারবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন। এরপরই ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন বনকর্মী তথা সমাজকর্মী মেয়ের অধিবাস। শুক্রবার বিয়ে। বিয়ের মণ্ডপ থেকে বাড়ি সমস্তই ক্ষতি হয়েছিল। ফের নতুন করে তৈরি করতে হলো।

আবেগাক্রান্ত পরিবার

বৈদ্যনাথবাবুর কাছে সঞ্জয়বাবু স্বয়ং ভগবান তিনি জানিয়েছেন, এর আগে সঞ্জয়বাবুর কথা শুনেছিলাম। নিজের পরিবারের বিপর্যয়ের সময় তাঁকে পাশে পাব একদিন তা ভাবিনি। মেয়ে সঙ্গীতার কাছে তিনিই এখন বরকর্তা। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে জানালেন সঞ্জয়বাবুর যাতে কোনও বিপদ কোনওদিন না হয় সে প্রার্থনাই করি।

Advertisement

 

 

Read more!
Advertisement
Advertisement