আবহাওয়ার পূর্বাভাস ছিলই। সিকিম সহ পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই মতো বৃষ্টি বেড়েছে পাহাড়ি এলাকায়। শনিবার রাত থেকেই কম-বেশি বৃষ্টি হচ্ছিল। রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি আরও বাড়ে। তাতেই পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীগুলিতে জলস্তর বাড়তে শুরু করে। যা নিয়ে আশঙ্কায় সেচ দফতরও। আপাতত কালিঝারায় তিস্তার জল ছেড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। নজর রাখা হচ্ছে মহানন্দা নদীর ক্যানেলগুলিতেও।
আরও পড়ুনঃ উত্তরে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, কমলা সতর্কতা জারি এই সব জেলায়
কালিঝোরা বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়েছে
গত দুদিন ধরে সিকিম-পাহাড়ে প্রবল বর্ষণে জলস্তর বেড়েছে তিস্তা সহ প্রতিটি পাহাড়ি নদীর। সিকিমে প্রবল বৃষ্টিতে জল বাড়ার কারণে প্রচুর পরিমান জল ছাড়া হয়েছে কালিঝোরা থেকে। এর ফলে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমহনি এলাকায় নদীগুলিতে জল বাড়তে পারে। ফলে মানুষকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বিশেষ করে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের অ্যালার্ট করা হয়েছে।
জল বাড়ছে তিস্তা নদীরও
গত দুদিন ধরে সিকিমে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে জলস্তর বেড়েছে তিস্তা নদীরও। আর এই নদীর জলই সবচেয়ে বেশি আশঙ্কায় রেখেছে সেচ দফতরকে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ৯.২০ নাগাদ শিলিগুড়ির সেবকের কাছের কালিঝোরা থেকে ২৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এই জলগুলি ডাউনস্ট্রিমে গজলডোবা হয়ে তিস্তার দোমহনীতে নামছে বলে জানানো হয়েছে। এই এলাকায় তিস্তার জলের পরিমাণ এমনিতেই বেশি থাকে। বাড়তি জল উপচে পড়তে পারে বলে এলাকার মানুষকে সচেতন থাকার অনুরোধ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
এখনও বিপদের খবর নেই
তবে এখনও পর্যন্ত তিস্তার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে জানানো হয়েছে। কোনও রকম সতর্কতা জারি করা হয়নি। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরবঙ্গ ও সিকিমে। শনিবার রাত থেকে সিকিমের বেশ কয়েকটি জায়গায় ধস নামার খবর মিলেছে। ছোটখাট ধস নেমেছে কালিম্পংয়ের কিছু জায়গাতেও।
আরও পড়ুনঃ ৫ জেলায় ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, উত্তরবঙ্গের বর্ষা বিদায় কবে?
এখনও টাটকা মাল নদীতে হরপা বানের দুঃস্মৃতি
এই এলাকায় গত বছর প্রবল বর্ষণে তিস্তার জল কালিঝোরার বাঁধ ছাপিয়ে রাস্তায় উঠে এসেছিল। যা প্রায় ২ দিন ছিল। ফের তেমন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে এলাকাবাসী আতঙ্কে। তেমন হওয়ার আগেই জল ছেড়ে দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। অন্যদিকে দশমীর রাতে মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বান এসে দুর্গাপুজোর বিসর্জনে যাওয়া বহু মানুষকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। মৃত্যু হয় অনেকের। আঙুল ওঠে প্রশাসনের দিকেও। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা। তাই কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছেন না প্রশাসনিক কর্তারাও।