সময় খুব কম পাওয়া গিয়েছিল। আরেকটু সময় পেলে, উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ফল অন্য রকম হতে পারতো। সরাসরি আলাপচারিতায় জানালেন নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ চেয়ারম্যান মুকুল বৈরাগ্য।
আরও ভাল ফল করতে পারতাম
একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে মুকুলবাবু জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে করোনা পরিস্থিতি, প্রচারে তেমন সময় পাওয়া যায়নি। আরেকটু সময় পেলে বিশেষ করে কোচবিহার, নদীয়া, আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিং জেলায় আরও ভালো ফল করতে পারতাম।
উত্তরবঙ্গে পরিশ্রমের আশাতীত ফল
তবে উত্তরবঙ্গে তাদের হিসেবে যে ক'টি আসন পাওয়ার কথা ছিল, তার চেয়ে ভালো ফল হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁরা প্রচার এবং বৈঠকের পর হিসেব করে দেখেছিলেন, তাঁরা উত্তরবঙ্গে ১৮ টা আসন পেতে পারেন। সেখানে তৃণমূল পেয়েছে বাইশটা আসন। যা তাদের হিসেবের বাইরে বলে মুকুলবাবু দাবি করেছেন।
নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূলের হয়ে রাজ্য চষে বেড়িয়েছেন
নির্বাচনের আগে মালদা, নন্দীগ্রাম, বাঁকুড়া, উত্তর দিনাজপুর, বলাগড়, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর চব্বিশ পরগণার অশোকনগর এলাকা চষে বেড়িয়েছেন তিনি।
মালদায় ভাল ফল
যেহেতু তিনি উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা, তাই কোন কোন আসনে তারা জিতবেন বলে আশা করেছিলেন, তার একটা পরিষ্কার ছবিও তিনি দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গে বাকি জেলাগুলিতে তাদের যেখানে জেতার আশা ছিল, সেখানে তাঁরাই জিতেছেন শুধুমাত্র মালদায় এভাবে বিপক্ষকে ব্রাউন ওয়াশ করবেন, সে আশা তাঁরাও করতে পারেননি। মালদার ক্ষেত্রে তাঁদের হিসেব মেলেনি। তা ছাড়া বাকি জায়গাতে হিসেব মিলে গিয়েছে।
প্রভাব সংখ্যায় কত
এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যে নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ এর সদস্য সংখ্যা রয়েছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার। ভোটার সংখ্যা হিসেব করলে চার গুণ সরাসরি ভোটার রয়েছে তাদের। তবে প্রভাব রয়েছে আরও অন্তত কুড়ি থেকে পঁচিশ লাখ নমঃশূদ্রের মধ্যে।
পিকের শংসাপত্র
তৃণমূলের হয়ে কাজে সাফল্যের নিরিখে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)-র শংসাপত্রও পেয়েছেন তিনি। তাঁর কাজের প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে জয়ের পর করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা বা কথা হয়নি। তবে পরবর্তীতে তাঁকে আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
বিকাশ পরিষদের তরফে উন্নয়নমূলক কাজ
মুকুলবাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ এর তহবিল থেকে নমশূদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বেশ কিছু কল্যাণমূলক কাজ করেছেন। তার মধ্যে সবার জন্য আবাস যোজনা এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে তিনশো গৃহহীনকে। পাশাপাশি এগারোটা স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দেওযা হয়েছে। যেগুলির পরোক্ষ প্রভাব ভোট বাক্সে পড়েছে। মুকুলবাবুর আক্ষেপ, এত কিছু করা সত্ত্বেও নির্বাচনের দিন ঘোষণা তে দেরি হওয়া এবং করোনা পরিস্থিতিতে সব জায়গায় পৌঁছতে না পারাটাই তৃণমূলকে উত্তরবঙ্গে পিছিয়ে দিয়েছে। তাঁর দাবি, ''গোটা রাজ্যে আমাকে হাজির থাকতে হয়েছে বিভিন্ন সভায়।সব মিলিয়ে অন্তত ৫০ টির বেশি সভা করা হয়েছে শুধুমাত্র নমঃশূদ্র বিকাশ পরিষদ এর তরফ থেকে।
খামতি মেটাতে পরবর্তী নির্বাচনে বদ্ধপরিকর
দক্ষিণবঙ্গে জোর দিতে গিয়ে কিছুটা খামতি থেকে গিয়েছে উত্তরবঙ্গে। যা সুদে-আসলে মিটিয়ে দিতে পরবর্তী পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচনগুলিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে চান তাঁরা। এবার মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আগে থেকেই কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।