Kalipuja 2022: শহর থেকে অনেকটা দূরে। জেলা জলপাইগুড়ি হলেও শিলিগুড়ি থেকেও সম দূরত্ব। জেলার শিকারপুর চা বাগান ঘেরা ছোট্ট গ্রামে ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরানী মন্দির। ইতিহাস এবং কিংবদন্তি এখানে মিলেমিশে একাকার। তার উপর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস আনন্দমঠ-এ যে ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর যে উল্লেখ রয়েছে, স্থানীয় মানুষরা মনে করেন এ দেবী চৌধুরানী, সেই দেবী চৌধুরানীই। এমনকী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদুঘরে একটি বজরা সংরক্ষণ করা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এটি দেবী চৌধুরানীর বজরা। যদিও সেটা নিয়ে প্রামাণ্য পৌঁছতে পারেননি এখনও পর্যন্ত গবেষকরা, তবু বিশ্বাসেই তো মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।
আরও পড়ুনঃ দার্জিলিঙে টাইগার হিলে সানরাইজ দেখা যাবে? শর্তসাপেক্ষে কাটল জটিলতা
দেবী চৌধুরানী মন্দির
গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়বে পাশাপাশি দুটি মন্দির। তার মধ্যে একটি মা কালীর মন্দির। মন্দিরের পাশে যে মন্দিরটি রয়েছে, তাতে একটি পুরুষ ও নারী মূর্তি রয়েছে। পাশাপাশি বাঘ, শিয়াল ও আরও কিছু বিগ্রহ নজরে পড়বে। অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন এটি শিব-পার্বতীর মন্দির। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস ও দাবি, বিগ্রহটি ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর। মূলত দেবী চৌধুরানীর মন্দিরের খ্যাতিতেই দেশ বিদেশের পর্যটকরা এখানে আসেন। বিশেষ করে বাঙালি পর্যটক, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের লোকেদের কাছে এটি বাড়তি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
ভবানী পাঠক আর দেবী চৌধুরানীর নামেই লোক আসেন
ভবানী পাঠক আর দেবী চৌধুরানী এই নাম দুটো বাঙালির কাছে মূল আকর্ষণ। কিছুটা ইতিহাস, কিছুটা কিংবদন্তী। কিছুটা লেখনির গুণে জীবন্ত হয়ে ওঠা দুটি চরিত্র। কয়েকশো বছর ধরেই বাঙালির মনে গেঁথে রয়েছে। বিখ্যাত উপন্যাস আনন্দমঠে নাম দুটি এমনভাবে রচনা করা হয়েছে, মানুষের কাছে আসল-নকল গুলিয়ে গিয়েছে। সেই প্রিয় চরিত্রগুলির নামে যখন যখন মন্দির, তখন তাঁর সঙ্গে যে কিছুটা ইতিহাস, কিছুটা মিথ জড়িয়ে থাকবে তা আশ্চর্য কি?
আরও পড়ুনঃ শিয়ালদহ-হাওড়া থেকেই এবার ট্রেনে সোজা গ্যাংটক-নাথুলা, খুব শীঘ্রই
মন্দিরের কালীপুজোও জাগ্রত
তবে এখানকার কালীমন্দিরও কিন্তু সমধিক জাগ্রত ও পূজিত। এই মন্দিরে প্রতি বছর দু'বার নিয়ম করে কালীপুজো হয়। একবার আষাঢ় মাসে, আরেকবার কার্তিক মাসে। খুব বড় না হলেও, নিয়ম নিষ্ঠায় ঘাটতি থাকে না। তবে কার্তিক মাসের পুজোয় লোক আসেন বেশি। এখানকার কালীপুজোর আলাদা আস্বাদ রয়েছে। চারিদিকে ঝোপ জঙ্গলে ভরা, এই মন্দির। এখনও অত্যাধুনিকতার ছোঁয়া গ্রাস করেনি। তাই গোটা উত্তরবঙ্গ, বিহার, নেপাল থেকে বহু মানুষ রাতে গাড়ি নিয়ে গিয়ে সারারাত জেগে এই পুজো দেখতে যান। পুজো দেখাও হয় পাশাপাশি কিছুটা অ্যাডভেঞ্চারও হয়।