আচমকা কলকাতা-শিলিগুড়ি বাস ভাড়া আকাশ ছুঁয়েছে। এসি-স্লিপার বাসের সর্বোচ্চ ভাড়া ১৮০০ টাকা। সেই ভাড়া পৌঁছেছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়। ফলে ভয়ে বাসের দিকে পা মাড়াচ্ছেন না পর্যটকরা। প্রায় কাছাকাছি ভাড়া পৌঁছে যাওয়ায় অনেকেই বিমানের খোঁজ করছেন। তবু বাসে আসতে চাইছেন না। বাস মালিকদের তরফে অনলাইন সংস্থাগুলির উপর দায় চাপানো হয়েছে। তাঁদের দাবি, অফলাইনে শিলিগুড়ি কিংবা কলকাতার ভাড়া আগের মতোই নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসক ও পরিবহণ দফতরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
ট্রেনে টিকিট নেই, বাসে ভাড়া বেশি
যতই স্পেশাল ট্রেন দেওয়া হোক,তা যাত্রীর তুলনায় এখনও কম। কোনও ট্রেনেই চটজলদি টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। বিমানভাড়া বরাবরই সাধারণ মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের বাইরে থাকে। ফলে বিকল্প বাস। তাতেও সমস্যা। কারণ সরকারি বাস থাকলেও সেগুলিও চাহিদার তুলনায় কম। পুজোর মরশুমে বাড়তি বাস চালানো হচ্ছে। সবগুলি হাউসফুল। তবু চাহিদার তুলনায় তা কিছুই নয়। অগত্যা উপায় বেসরকারি লাক্সারি বাসগুলি। আর সেখানেই বিপত্তি। লাগামছাড়া ভাড়ার কারণে অনেকে ঘুরতে আসার পরিকল্পনাও বাতিল করে দিচ্ছেন।
কলকাতা-শিলিগুড়ি লাগামছাড়া ভাড়া
এমনিতে শিলিগুড়ি-কলকাতা এসি সেমি স্লিপারের ভাড়া সর্বোচ্চ ১৫০০ টাকা। সেখানে স্লিপার হলে ১৮০০ টাকা। অথচ বুকিং করতে গেলেই ভাড়া দেখাচ্ছে কোথাও ৪ হাজার, কোথাও সাড়ে ৪ হাজার আবার কোথাও ৫ হাজার টাকা। পুজোর কয়েকদিন আগে থেকেই বাসের টিকিটের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সাধারণ পুশব্যাক আসনের বাসেও বাতানুকূল বাসের ভাড়া তিন থেকে চার হাজার টাকা। এই দাম কবে কমবে কেউ জানে না।
ফলে ৪-৫ জনের দল থাকলে শিলিগুড়ি-কলকাতা যাতায়াতেই ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ ৩-৪ দিন উত্তরবঙ্গ ঘুরতে সব মিলিয়ে প্রায় লাখখানেক টাকা খরচ হয়ে যাবে একটি দলের। সমস্যার সমাধানে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও বন্দোবস্ত দেখা যায়নি। ফলে সমস্যা বাড়ছে।
বাস মালিক-চালকদের দাবি
শিলিগুড়ি বাস মালিক ও চালকদের সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে যে বাসভাড়া অনলাইন বুকিংয়ে বেশি দেখাচ্ছে এটা ঠিক। তবে অফলাইনে ভাড়া একই রয়েছে। কোথাও ভাড়া বাড়েনি। শিলিগুড়ি বাস ওনার্স অ্যান্ড বুকিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সন্তোষ সাহা জানান, আসলে অনলাইনে টিকিট আগে থেকে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ট্রাভেল সংস্থাগুলি টিকিট কেটে রাখায় বাস টার্মিনাসের কাউন্টারে গিয়ে কেউ টিকিট পাচ্ছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে চড়া দামে টিকিট কাটতে হচ্ছে অনলাইনেই। যাঁরা পারছেন না, তাঁরা বিফল মনোরথে বাড়ি ফিরছেন পরিকল্পনা বাতিল করে।
এনবিএসটিসি ভরসা, তবে জায়গা পাওয়া মুশকিল
বাড়তি বাস চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (NBSTC)-এর চেষ্টার তুলনায় চাহিদা অনেকটাই বেশি। যাঁরা পেয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা হাতে চাঁদ পাচ্ছেন। বাকিদের অবস্থা কী হবে কেউ জানে না।