ফের বিতর্কের কেন্দ্র নকশালবাড়ি
যত কান্ড নকশালবাড়িতে। গত বেশ কিছু বছর ধরে নকশালবাড়িতে একের পর এক জমি দখল হয়ে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কখনও সরকারি পতিত জমি, কখনও চা-বাগানের জমি, আবার কখনও মানুষের চাষ জমি। বিক্ষিপ্তভাবে ক্ষোভ বিক্ষোভ আন্দোলন হলেও কখনোই দানা বাঁধতে পারিনি আর্থিক লেনদেনের পাল্লা ভারী থাকায়।
চাষের জমিতে সরকারি প্রকল্পে আপত্তি
সম্প্রতি ভারত-নেপাল সীমান্ত মেচি নদীর তীরে সরকারি প্রকল্পের জমি নেওয়ার সিদ্ধান্ত একজোট হয়ে তারা জমি দিতে অস্বীকার করছেন। স্থানীয় চাষিদের দাবি, প্রাণ দেব, কিন্তু জমি দেব না। প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে এই এলাকায় তারা চাষবাস করছেন। ফলে আচমকা জমি ছাড়তে সরকারি নির্দেশ আসায় মাথায় বাজ পড়েছে তাঁদের। যেভাবে তাঁরা কৃষিজমি রক্ষা কমিটি তৈরি করে চাষের জমি ছাড়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, তাঁদের সমর্থন করেছে বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন।
আন্দোলনকে নকশালদের সমর্থন
ইতিমধ্যেই তাঁদের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন নকশাল নেতা অভিজিৎ মজুমদার। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন ১২ বছরের বেশি যাঁরা কোনও জমি দখল করে থাকেন, তাঁদের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইন অনুযায়ী দখলস্বত্ব পাওয়ার কথা। সরকার যদি কোনও প্রকল্প কোনও জমিতে করতে চায়, তাহলে ওই জমিতে থাকা কিংবা জমি দখলসত্ত্ব ভোগ করা মানুষদের সঙ্গে বসে তাদের নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ দিয়েই তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করা উচিত। যদি তা না হয়, সরকার যদি নমনীয় না হয়, তাহলে সিপিআইএমএল-এর পক্ষ থেকে তাঁরা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াবেন।
প্রায় ৫০ বছরের দখল ভোগ চাষিদের
নকশালবাড়ির সুরজবরজোত এলাকায় যেখানে জমি নিয়ে বিতর্ক, ওই এলাকায় আগে গ্রাম ছিল। পরে ৭৪ সালের বন্যায় গ্রামে জল ঢুকে ঘরবাড়ি ভেসে যায়। তখন এখান থেকে লোকজন সরে গিয়ে অন্য জায়গায় ঘরবাড়ি তৈরি করে থাকতে শুরু করেন। জল নেমে গেলে ফাঁকা জায়গায় চাষাবাদ শুরু হয়। লাগাতার সেই সময় থেকে চাষাবাদ করে আসছেন তাঁরা। এখান থেকেই প্রান্তিক মানুষের সারা বছরের খাবার জোগাড় হয়।
পাট্টা মেলেনি
অন্যান্য বিভিন্ন জায়গায় যেখানে ১২-১৫-২০ বছর বাস করার পরই পাট্টা মিলেছে, এখানকার মানুষ ৪৫ বছর বা ৫০ বছর ধরে থেকেও, আবেদন করেও পাত্তা পাননি বলে অভিযোগ।
চাষের ভরা মরশুম এখন
বর্ষার সময়ে এ সময় ধান রোপন করার সময় অনেকেই ধানের বীজ বপন করে হাল দিতে শুরু করেছেন গত সোমবার প্রশাসনিক আধিকারিকরা জমি অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করায় তাদের এখন মাথায় বাজ।
আন্দোলনের আভাসে ষাট-সত্তর দশকের স্মৃতি
ইতিমধ্যেই তারা কৃষিজমি রক্ষা কমিটি তৈরি করে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছেন সেই সঙ্গে তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে দিয়েছেন নকশালরা ফলে তাদের আন্দোলন রাজ্য জাতীয় রাজনীতিতে আলাদা মাত্রা পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ষাট সত্তর দশকের আগুনঝরা দিনের কথা মনে ঘুরে ফিরে আসছে বর্ষীয়ানদের।