ফের হানা পুলিশের
ফের মাটিগাড়ার সিটি সেন্টার শপিং মল, ফের অবৈধ কলসেন্টার। পুলিশ সক্রিয় হতেই একের পর এক গোপন আস্তানা থেকে টেনে বের করে আনা হচ্ছে এদের। যদিও কতদিন আটকে রাখা যাবে বা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।
মাটিগাড়র সিটি সেন্টারে পুলিশি অভিযান
শনিবার শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার সিটি সেন্টার শপিং মলের অফিস কমপ্লেক্সে একযোগে অভিযান চালায় মাটিগাড়া থানার পুলিশ, স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও গোয়েন্দা বিভাগ। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে ২৪ জন যুবতী এবং ২ যুবককে। পাশাপাশি ওই অফিসের বেশকিছু সামগ্রীও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সম্পূর্ণ ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলছিল প্রতারণা ব্যবসা
পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ অনেকদিন ধরেই সেখানে এই অবৈধ কলসেন্টার চলছিল। শনিবার ওই অফিসে যখন পুলিশ হানা দেয় সে সময় দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করা ছিল। এরপর দরজা ভেঙে কলসেন্টারের অফিসের ভিতরে ঢোকে পুলিশ কর্মীরা।
আটক ২৬ জন যুবক-যুবতী
ওই কলসেন্টারের অফিস থেকেই ২৪ জন যুবতী এবং ২ যুবককে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শিলিগুড়িতে বেশ কয়েকদিন ধরেই অবৈধ কলসেন্টার বন্ধ করতে তৎপরতা দেখাচ্ছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের প্রতিটি থানা এবং স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। এই অবৈধ কলসেন্টারগুলি বন্ধ করার লক্ষে পুলিশের অভিযান অব্যাহত। বিগত সাত দিনের ব্যবধানে কল সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ফের সাফল্য পেল শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ।
কমিশনার পদে গৌরব শর্মা
বিশেষ করে পুলিশ কমিশনার পদে গৌরব শর্মা বসার পরই তৎপরতা শুরু হয়েছে। এর আগে পুলিশের মদতেই এই কলসেন্টারগুলি ফুলে ফেঁপে উঠছিল বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন কল সেন্টারগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে চায়নি কোনও থানাই। আর যেহেতু কল সেন্টারগুলি শিলিগুড়িতে বসে ভিন রাজ্যে প্রতারণার জাল ছড়ায়, তাই স্থানীয় থানায় অভিযোগ আসার প্রশ্ন নেই। তাই সেই সুযোগ নিয়েছিল একাংশ পুলিশ ও কলসেন্টার মালিকরা। তার মধ্যে কিছু যুবক নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
কীভাবে চলে প্রতারণা
মূলত বন্ধুত্বের বিজ্ঞাপন দিয়ে কখনও দেহ ব্যবসা, কখনও বাড়িতে বডি ম্যাসাজের জন্য প্রলোভন দেওয়া হয়। কেউ প্রলোভনের ফাঁদে পা দিলে তাদের কাছ থেকে আগাম অর্থ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করতে বলা হয়। তারপরই প্রতারকরা ফোন বন্ধ করে দেয়। মালিকরা ভুয়া নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলে। যাতে তাদের চট করে ধরা না যায়। পাশাপাশি ভিন রাজ্যে হওয়ায় কিছু টাকার জন্য কেউ আর অভিযোগ জানায় না। তার উপর সমস্তটাই পরিবার-আত্মীয়দের গোপন রেখে চলে। তাই প্রকাশ্য়ে কেউ মুখ খোলে না। সেই সুযোগে দিব্যি চলে ব্যবসা। শুধু স্থানীয় থানাকে ম্যানেজ করে রাখলেই চলে। এদের প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা হয়। কারও এখানকার অর্জিত টাকা দিয়ে ক্যাসিনো, কোথাও হোটেল, বার, পাব, রেস্তোরাঁ চলে। সব মিলিয়ে করমুক্ত লাভ।
কালীপুজোর আগে প্রথম অভিযান
প্রথম পুলিশি অভিযান চলে গত বছর কালীপুজোর আগে তেলেঙ্গানা পুলিশের একটি দল এসে শিলিগুড়িতে কয়েকজন কল সেন্টারের প্রতারককে ধরে। তারপর লজ্জার খাতিরে শিলিগুড়ি পুলিশ কয়েকটি অভিযান চালায়। তারপর ঠিকানা বদলে ফের ব্যবসা চলছিল। নতুন পুলিশ কমিশনার আসার পর ফের সক্রিয় হয়েছে পুলিশ।