রাজ্যের করোনা বিধিনিষেধের জেরে পর্যটনেও বিপর্যয় নেমেছে। খচাখচ ভরা পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্স এর সমস্ত হোটেল-রিসর্টগুলি খালি করতে শুরু করেছেন পর্যটকেরা। তুষারাবৃত গ্যাংটক, লাচুং, লাচেন, দার্জিলিং, মিরিক, সান্দাকফু, ঘুম, জোড়বাংলো ছেড়ে বুকে পাথর রেখে বাড়ি ফিরছেন পর্যটকরা। মাথায় বাজ ভেঙে পড়েছে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কয়েক লক্ষ মানুষের।
সেই সঙ্গে নতুন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে টয়ট্রেনকে ঘিরে। রাজ্যের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, লোকাল ট্রেন ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে। কিন্তু টয়ট্রেন নিয়ে কোনও রকম আলাদা নির্দেশিকা নেই রাজ্যের। ফলে ধরে নেওয়া হচ্ছে টয়ট্রেন আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। কিন্তু পর্যটন বন্ধ থাকলে টয়ট্রেনে চড়বে কে? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মনে।
সেই সঙ্গে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, পর্যটক এর অভাবে যদি টয় ট্রেন বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে ফের টয়ট্রেনের হেরিটেজ তকমা ধাক্কা খেতে পারে। এমনিতেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বারবার থমকে যায় ট্রেনের যাতায়াত। কখনও রেললাইন ভেঙে, কখনও রাস্তা নষ্ট হয়ে ট্রেনের গতি রুদ্ধ হয়েছে সাম্প্রতিক অতীতের বেশ কয়েক বছরে।
এই মুহূর্তে তুষার পর্যটনকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে পর্যটকদের ঢল ছিল। কানায় কানায় পূর্ণ সমস্ত এলাকা। কিন্তু আচমকা বিধি-নিষেধের ফলে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা। ফলে আগামী দু-একদিনের মধ্যেই টয়ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা তলানিতে থাকবে বলে মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ। দার্জিলিং-হিমালয়ান রেলওয়ে ডিরেক্টর অনিন্দ্য কুমার মিশ্রা জানিয়েছেন, নিয়ে কোনও রকম বিধিনিষেধ নেই. তবে কতগুলি যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালানোতে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না, সেটি বিবেচনা করা হবে।
রবিবার হিমকন্যা রাইট বাদ দিয়ে সমস্ত জয়রাইড, এনজেপি-দার্জিলিং টয়ট্রেন রাইড হাউসফুল ছিল বলে জানা গিয়েছে। এমনকী দার্জিলিং থেকে কার্শিয়াং কিংবা এনজেপি থেকে কার্শিয়াং প্রচুর যাত্রী ছিলেন। আগামী কয়েক সপ্তাহে টয় ট্রেনের আগাম বুকিং ছিল। রবিবার বিকেলের পর থেকেই সে সমস্ত বুকিং ক্যানসেলের হিড়িক শুরু হয়েছে। অনলাইনে বুকিং ক্যানসেল করছেন রাজ্য সহ বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকরা। তাই আপাতত সিদ্ধান্ত না হলেও পর্যটকদের এবং যাত্রী সংখ্যায় নজর রাখা হচ্ছে। তেমন হলে হয়তো ফের বন্ধ যাবে টয় ট্রেন পরিষেবা।