বাম ঘাঁটি সরিয়েও উত্তরে ফল ভাল নয়
উত্তরবঙ্গে এক সময় বামেদের ঘাঁটি ছিল। সময়ের সাথে সাথে বাম দুর্গের পতন হয়েছে। রাজ্যে তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। কিন্তু সেভাবে মানুষের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে পারেনি। ২০১১ তে প্রবল ঘাসফুল ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে যাওয়া বামেদের উড়িয়ে দিলেও অবাধ দুর্নীতির অভিযোগ মানুষের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে তাঁদের।
লাল রং ফিকে হয়ে গেরুয়া হয়েছে
বামেরা সরে গেলেও সেই জায়গা দখল করেছে গেরুয়া বাহিনী। বিশেষ করে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একচ্ছত্রভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে বিজেপি। যা সার্বিক সাফল্যের মধ্যেও কাঁটার মত বিঁধছে তৃণমূল নেত্রীর মনে। ফলে উত্তরবঙ্গে বিশ্বাস ফেরাতে দরকার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি।
বদলে যাওয়া অভিষেকেই ভরসা
ইতিমধ্যেই পর্যালোচনা করতে কাজ শুরু করে দিয়েছেন ভোট প্রকৌশলী প্রশান্ত কিশোর। তার সঙ্গে উত্তরবঙ্গে মানুষের মধ্যে বিশ্বাস ফেরাতে এবং সংগঠন গোছাতে এবার সরাসরি কাজ করবেন তৃণমূলের অঘোষিত নম্বর-টু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই তাঁর ওপর সাংগঠনিক দায়িত্ব অর্পণ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তারপরই বিভিন্ন প্রবীণ নেতাদের সাংগঠনিক শক্তিকে কাজে লাগাতে আসলে নেমে পড়েছেন তিনি।
উত্তরবঙ্গে যাবেন অভিষেক
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তার উত্তরবঙ্গ সফরে আসার কথা। সেখানে বিভিন্ন জেলার সংগঠনের সঙ্গে বসে পরবর্তী স্ট্র্যাটেজি ঠিক করবেন তিনি। তবে সবার সঙ্গে কথা বললেও সিদ্ধান্ত নেবেন অভিষেক নিজেই। দলীয় সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক
যুব সভাপতির পদ থেকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে আসা হয়েছে তাঁকে। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদ দেওয়া হয়েছে অভিষেককে। যা এক সময় ছিল মুকুল রায়ের হাতে। মুকুল রায় থাকলেও, অভিষেকেই আস্থা রাখছে দল। তবে উত্তরবঙ্গের সংগঠন বাড়াতে এর আগে অরূপ বিশ্বাস, গৌতম দেব, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, অর্পিতা ঘোষ সহ বিভিন্ন নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে ফল ভালো হয়নি। বরং ব্যর্থতার অতলে তলিয়ে গিয়েছে দল।
নয়া চ্যালেঞ্জে প্রস্তুত যুবরাজ
এবার তাই সম্পূর্ণ খোলনলচে বদলে মনিটরিং কমিটির ভোল পাল্টে দিচ্ছে দল। প্রশান্ত কিশোর এবং অভিষেকের জোড়া ফলা, সঙ্গে মুকুল রায়ের ক্ষুরধার মস্তিস্ককে কাজে লাগিয়ে উত্তরবঙ্গের জমি পুনরুদ্ধার এর নামছে তাঁরা। কাজ কঠিন। তবে শূণ্য থেকে শুরু করে গোটা বাম সাম্রাজ্য উপড়ে ফেলা তৃণমূল অবশ্য পরবর্তী রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।