উলটপুরাণ মালবাজারে
গোটা রাজ্য জুড়ে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে লকডাউনের নিয়মেও বিধি-নিষেধ শিথিলতা আনা হয়েছে। সেখানে সম্পূর্ণ উল্টো পথে হেঁটে সম্পূর্ণ নিশ্ছিদ্র লকডাউন ঘোষণা করল ডুয়ার্সের মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ি পঞ্চায়েত। রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাগাতার কমলেও এই নির্দিষ্ট এলাকায় বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। তাই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা থেকে লকডাউন শুরু
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন শুরু হয়ে গেল। বুধবারই গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ঘোষণা করে দেওয়া হয় স্থানীয়ভাবে নিশ্ছিদ্র লকডাউনের কথা। যাঁরা লকডাউন অমান্য করবেন কিংবা রাজ্যের দোহাই দিয়ে রাস্তায় ইতস্তত ঘোরাঘুরি করতে চেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের সহায়তা চেয়েছে পঞ্চায়েত
মালবাজার থানায় ইতিমধ্যেই আর্জি দেওয়া হয়েছে, তাদের এলাকায় যাতে লকডাউন কড়া ভাবে পালন করা হয়, সে কারণে বিষয়টি সুনিশ্চিত করার জন্য তারা যেন সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বাহিনী ওদলাবাড়ি এলাকায় মোতায়েন করেন। পুলিশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে পঞ্চায়েতের তরফে।
এলাকায় বেলাগাম করোনার আক্রান্ত
গত ১৫ দিনে ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের গজলডোবা থেকে পাথরজোড়া বাগান পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। একই পরিবারের একাধিক আক্রান্ত হচ্ছেন। গোটা রাজ্যে এমনকী উত্তরবঙ্গে যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে, সেখানে এই এলাকাতে রহস্যজনকভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গ কমেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সুস্থতার হারও বেশি। কোন রসায়নে করোনা রোগীর সংখ্যা শুধু ওদলাবাড়িতেই বাড়ছে বুঝে উঠতে পারছেন না স্বাস্থ্য দপ্তরও।
লক ডাউন ছাড়া গতি দেখছে না পঞ্চায়েত
তাই অনুরোধ-উপরোধে কাজ না হওয়ায় করা লকডাউনের পথে হেঁটেছেন তারা। গোষ্ঠী সংক্রমণে আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেননি ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও। এক চিকিৎসকের একটা আশঙ্কার অডিও বার্তা ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরই তড়িঘড়ি লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।
মানুষের জীবনের নিরাপত্তায় অগ্রাধিকার
পঞ্চায়েতের তরফে জানা গিয়েছে, মানুষের নিরাপত্তা সবার আগে। ব্যবসায়ীদের সামান্য ক্ষতি হবে ঠিকই। কিন্তু মানুষ বাঁচলে ফের ব্যবসা হবে। মানুষ জন যেভাবে নিয়মকানুন করোনা বিধি, কোনও কিছুরই তোয়াক্কা না করে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাতে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। এতে আগের রাশ টানা দরকার।