স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ফেরালো নার্সিংহোম, জমি, ভিটে মাটি বিক্রি করে মায়ের চিকিৎসা করাচ্ছে ছেলে।
স্বাস্থ্য দফতরকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে শিলিগুড়ির নার্সিংহোম
রাজ্য সরকারের বারবার ঘোষণার পরও বেশ কিছু নার্সিংহোম সরকারের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের মর্জি মতো চলছে। যেখানে করোনা রোগীর চিকিৎসাতেও স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নেওয়া বাধ্যতামুলক করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু শিলিগুড়িতে দেখা গেলো তাঁর উল্টো চিত্র।
নার্সিংহোমের দোসর পুলিশ?
শিলিগুড়ি ভক্তিনগরের একটি নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া হলো না। এমনকী পুলিশে অভিযোগ করতে গেলে ভক্তিনগর থানাও নাকি অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেছে। এই ঘটনায় উত্তেজনা শহরে। বিষয়টি শিলিগুড়ি প্রশাসক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকারকে জানালে উনি বলেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া বাধ্যতামুলক। যে ঘটনা ঘটেছে তাঁর অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেব নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে।
ছেলেকে টাকার জন্য চাপ নার্সিংহোমের
আলিপুরদুয়ারের এক মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের বাড়ি আলিপুরদুয়ারে। আক্রান্ত ওই মহিলার নাম সুখেশ্বরী রাভা। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি চিকিৎসাধীন। তাঁর ছেলেকে বলা হয়েছে মায়ের অবস্থা ভালো নয় আপনি টাকা যোগাড় করুন। তখন ছেলে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দিলে তা নেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। অত টাকা যোগাড় হবে কীভাবে! বিপাকে পড়েন সুখেশ্বরীর ছেলে গোপী।
বাড়ি-গবাদি পশু বিক্রি করে দিয়েছেন
তিনি মায়ের চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যেই জমি সহ বাড়ির গৃহপালিত পশু বিক্রি করে দিয়েছেন।এখনও নাকি আরও টাকা লাগবে! অথচ তাঁর মায়ের সঙ্গে তাঁকে দেখাও করতে দেওয়া হয় না বলে তাঁর অভিযোগ। এ বিষয়ে গোপী রাভা বললেন, মা করোনা পজিটিভ হতেই আলিপুরদুয়ার থেকে মাকে নিয়ে এলাম শিলিগুড়িতে ভালো চিকিৎসার জন্য।
মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি, অভিযোগ
গত সোমবার থেকে মা ভর্তি কিন্তু আমাকে দেখতে দেওয়া হয়নি একবারও। আমি কিছু জিজ্ঞাসা করলেই বলে মায়ের অবস্থা ভালো নয়। টাকা লাগবে চিকিৎসার জন্য। আমি যখন বলি মাকে ছেড়ে দিতে। আমি অন্য কোথাও নিয়ে যাবো তখন আমাকে বলে বিল দিয়ে নিয়ে যান। তখনই আমি স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড দিলে তা নেবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
টাকা দিয়েও মাকে ছাড়া হচ্ছে না
আমি মাকে ছাড়াতে নিজের জমিজমা বিক্রি করে টাকা শোধ করি। কিন্তু আমাকে বলা হচ্ছে এখনও নাকি টাকা বাকি রয়েছে। আমার কাছে আর টাকা নেই। তাহলে আমি কি করব? এখন জানা নেই।
মা বেঁচে আছে কি না, সন্দেহ ছেলের
এমনকী আমার মা বেঁচে আছে কিনা, তাও জানি না। ভক্তিনগর থানায় গিয়েছিলাম অভিযোগ দায়ের করতে এদের বিরুদ্ধে। তাঁরাও অভিযোগ নেয়নি।
রঞ্জনের হুমকি
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান রঞ্জন সরকারের কাছে গেলে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সব নার্সিংহোমকে নিতে হবে।রোগীর পরিবার আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবো।
মুখে কুলুপ নার্সিংহোমের, ধোঁয়াশা
অন্যদিকে নার্সিংহোমের ম্যানেজার সঞ্জীব দে এর সাথে যোগাযোগ করলে উনি কিছুই বলতে চাননি এ বিষয়ে। জানালেন, বাইরে আছি তাই কিছু বলতে পারব না। কে বলতে পারবেন? সদুত্তর মেলেনি।