ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠান করে ফুল মিষ্টি বিতরণ করে চালু হয়েছিল পর্যটক স্পেশাল ভিস্টাডোম কোচ। শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত। যদিও অনেকেই তাকে পুরোপুরি ভিস্তাডোম বলতে নারাজ। কারণ এর বেশিরভাগ অংশটাই ঢাকা। সাধারণ ট্রেনের চাইতে বেশি বহির্বিশ্ব দর্শন করার খানিকটা সুযোগ বেশি এই ট্রেনে। কিন্তু চালু হওয়ার বছর পূর্তির আগেই মুখ থুবড়ে পড়েছে রেলের এই উদ্যোগ।
কেন এই সমস্যা তৈরি হলো? মানুষের আগ্রহ কেন কমে যাচ্ছে?
তা নিয়ে রেলের সমীক্ষার দরকার বলে মনে করছেন পর্যটন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে পর্যটকরা বলছেন, অস্বাভাবিক বেশি ভাড়া, আবার কেউ বলছেন শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত রাস্তায় দু'পাশে জঙ্গল এবং একঝলক পাহাড় ছাড়া তেমন কিছু দেখার নেই। এমনকী এই জঙ্গল চিরে যাওয়ার সময় দু'পাশে বিভিন্ন পশু পাখি দেখা যায়, খুব একটা তাও নয়। কালেভদ্রে এক আধটি দেখা মিললেও তাতে পর্যটকদের আশ ভরার কথা নয়।
ভাড়া বেশি
সাধারণ ট্রেনে যেখানে শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার যেতে ১০০ টাকারও কম টাকার টিকিট লাগে সেখানে এক্সপ্রেস ট্রেনের মেরেকেটে দেড়শ টাকা থেকে ২০০ টাকা টিকিট মূল্য। সেখানে সেই টিকিটের দাম এক ধাক্কায় পাঁচ গুণ বেশি ভিস্তাডোমে। সেই অনুযায়ী পরিষেবাও ঠিকমতো মিলছে না। এমন অভিযোগ রয়েছে পর্যটকদের তরফেই।
ক্রমশ কমছে রাইড
প্রথমে চালু হয়েছিল সপ্তাহে তিন দিন, তারপর ক্রমশ চাহিদা বাড়তে থাকায়, তার ছয় দিন করা হয়। শেষে সাতদিন ভিস্তাডোম কোচযুক্ত ট্রেনটি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেল। তারপরে নতুন করে বিধিনিষেধের ধাক্কায় বেশ কিছুটা পর্যটক ভাঁটা পড়ে। তারপর থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। তাই এখন আবার সপ্তাহে দুদিন এ ফিরে এসেছে ট্রেনটি। শিলিগুড়ির এনজেপি স্টেশন থেকে আলিপুরদুয়ার এবং আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি, সপ্তাহে দুবার করে শনি ও রবিবার এই ট্রেন চলবে। রেল কর্তারা জানিয়েছেন এ পর্যায়ে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
পর্যটক আকর্ষণ কমছে
তবে গ্রিন বেঞ্চ এর রায় একমাস আগে জানানো হয়েছে। বাবা জয়ন্তীর জঙ্গলে রাত্রিবাস করা যাবে না। আর সে কারণেই সেখানে যাওয়ার প্রতি আকর্ষণ হারিয়েছেন। অনেকেই হু হু করে কমছে পর্যটকের সংখ্যা। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানিয়েছেন যে, রেল এই ট্রেনটিকে নিয়ে আরও যত্নবান হতে পারতো। অন্য পাঁচটা ট্রেনের মতো শুধু চালু করে দিলে হবে না। পর্যটক স্বাচ্ছন্দের পাশাপাশি আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য নিয়মিত রিভিউ করে তা চালু করতে হবে। মাঝে মধ্যে রাইড-বাড়া কমা হলেও তা ঠিকমতো পর্যটকদের কাছে পৌঁছচ্ছে না।