যেখানেই সন্ধ্যা হয়, সেখানেই হাতির ভয়
সূর্য পশ্চিমে খানিক ঢলে পড়লেই তড়াক করে সজাগ হয়ে পড়ছেন এলাকার কয়েকশো কৃষক। রাত জাগতে হবে তো! কেন চোর-ডাকাত কিংবা ভূতের ভয়? না। এ তার চেয়েও বেশি। চোর-ডাকাত তবুও এক আধটি বাড়িতে এক রাতে হানা দেয়। ভূত তো কেউ দেখে, কেউ দেখে না। কিন্তু এরা যখন আসেন, তখন গ্রামকে গ্রাম একেবারে সাফ করে দিয়ে যান।
হাতির হানায় নাজেহাল
উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে তাদের সংখ্যা গত কয়েক বছর ধরেই ক্রমবর্ধমান। সন্ধ্যা হলেই তারা ডুয়ার্সের ক্রান্তি ব্লকের চাপাডাঙ্গা-চ্যাংমারি এলাকায় পালে পালে ঢুকে পড়ছে। এক পাল দামাল হাতির তাণ্ডবে নাজেহাল ডুয়ার্সের তিস্তার চর এলাকার মানুষ।
খেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে
একপালে ৫০-৬০-৭০ টা পর্যন্ত হাতি থাকছে। হাতির পালের তাণ্ডবে প্রতিদিনই ক্ষেতের ধান, ভুট্টা, পাট, আখ নষ্ট হচ্ছে। যেগুলো হাতি খায় না, সেগুলোও তুলে-উপড়ে লন্ডভন্ড করে দিয়ে যাচ্ছে দু-একটা দলছুট দুষ্টু। তাদের দুষ্টুমির জেরে সাধারণ মানুষের সারা বছরের পরিশ্রমের ফসল যাচ্ছে জলে।
সূর্যাস্ত গেলেই প্রকাশ্যে আসে হাতির পাল
চাপাডাঙ্গা, মৌয়ামারি চর, প্রেমগঞ্জের চর, গোলাবাড়ি, সাহেববাড়ি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় ৭-৮০ টি হাতির দল ঘাঁটি গেড়েছে। দিনের বেলা বৈকন্ঠপুর জঙ্গলে গিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। সূর্য অস্ত যেতে শুরু করলেই আধো আলোয় দেখা যায়, তারা দলবেঁধে গ্রামের দিকে চললেন।
কিছুতেই ফেরে না নাছোড় হাতির দল
পটকা-বোমা ফাটিয়ে কিংবা ক্যানেস্তারা বাজিয়ে মাইক বাজিয়েও কোনও লাভ হয় না। খুব বেশি বিরক্ত করলে বা কাছে চলে গেলে, লাথি মেরে ফেলে দিয়ে গিয়েছেন দু-একজনকে, এমন নজিরও রয়েছে। তিস্তার চর ধরে হাতির তান্ডব রুখতে রাত জেগেও সব জায়গায় সুরাহা করতে পারছেন না গ্রামবাসীরা নিজে। বনদপ্তর এর কাছে আবেদন জানালেও এতগুলি হাতিকে সামলানোর উপায় বাতলাতে পারছেন না তাঁরাও। তার মধ্যে টানা বৃষ্টিতে তিস্তার জল বাড়ায় বনদপ্তর এর সমস্ত রকম মেকানিজম ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। হাতিগুলিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরানো যাচ্ছে না।