রাতের অন্ধকারে, আলো-আঁধারি রাস্তায় আচমকা ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ল গাড়ি। কিসের সঙ্গে ধাক্কা লাগলো বোঝার আগেই গাড়ির হেডলাইটের আলো ঠিকরে পড়ে যা দেখলেন চালক, তাতে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে গেল শিরদাঁড়া দিয়ে। রাস্তার উপর পড়ে রয়েছে চার-সাড়ে চার ফুটের একটি চিতাবাঘ। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ি মহকুমার শহরতলি ফাঁসিদেওয়ায়। গাড়ির ধাক্কায় চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করতে বন দফতরের একটি রেসকিউ টিম এসে পৌঁছেছে।
শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের অন্তর্গত হাঁসখোয়া এলাকায় ৩১ নং জাতীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হয়েছে চিতাবাঘ। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে। জানা গিয়েছে, চিতাবাঘটি রাস্তা পার করতে গিয়ে একটি গাড়ির তাকে সজোরে ধাক্কা মারে। বাঘটির পা ও নীচের অংশে লেগেছে। ফলে হাঁটতে পারছিল না বাঘটি। ঘটনাস্থলেই জখম অবস্থায় রাস্তার উপরে বেশ কিছুক্ষণ বসেছিল চিতাবাঘটি।
পরে রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলতে থাকায় কোনও রকমে খুঁড়িয়ে রাস্তার পাশে থাকা চা বাগানে ঢুকে পড়ে। এরপর খবর পেয়ে বনদপ্তরের ঘোষপুকুর রেঞ্জের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত চিতাবাঘকে উদ্ধার করে। বাঘটিকে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চিতাবাঘটি কোমরে ভাল রকম চোট পেয়েছে। তাই আপাতত তাকে শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কে রাখা হবে। সেখানেই তার চিকিৎসা করা হবে। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর তাকে গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে। তবে এদিন রাতে ওই এলাকায় চিতাবাঘের দুর্ঘটনার খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
ওই এলাকায় চিতাবাঘের নিত্য আনাগোণা রয়েছে বলে বনকর্মীরা জানিয়েছেন। এলাকাবাসীও স্বীকার করেছেন, যে তাঁরা ভয়ে থাকেন। কখন বাড়িতে, গোয়ালে হানা দেয় চিতাবাঘ। তবে পারতপক্ষে মানুষের উপর হামলা করে না এই এলাকার চিতাবাঘগুলি। বাগডোগরা ও নকশালবাড়ির টুকুরিয়া রেঞ্জ রয়েছে সামনে। কার্শিয়াং ডিভিশনের এই ফরেস্টে প্রচুর চিতাবাঘ রয়েছে।