দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা কুয়ো সাফাই করতে নেমে মৃত্যু হল ২ চা-শ্রমিকের। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আরও একজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়ায়। শুক্রবার সকালে এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত না করে কেন এমনভাবে শ্রমিকদের নামিয়ে দেওয়া হল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
ঘটনাটি ফাঁসিদেওয়ার কমলা চা বাগানে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল এই কুয়োটি। সম্প্রতি শ্রমিক ও এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের প্রয়োজনে বাগান কর্তৃপক্ষ কুয়োটি সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়। পানীয় জলের উপযোগী করে তুলতে এদিন শুক্রবার সকালে মোমবাতি জ্বালিয়ে কুয়োয় নামে দুই শ্রমিক। প্রথমে একজন ও পরে তাঁকে সাহায্য করার জন্য আরও একজন নামেন। তাঁরা আর উঠে আসেননি।
এদিন দু’জন কুয়োতে নামার বেশ কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পরও তাঁদের কোনও সাড়া-শব্দ মিলছিল না। উপরে থাকা লোকজনও ডাকাডাকি করার পরও সাড়া দিচ্ছিলেন না কুয়োয় নামা দুই শ্রমিক। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অন্যদের মধ্যে। পরে তাঁদের খোঁজে আরও একজন কুয়োয় নামে। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যে তিনিও সাড়া দিচ্ছিলেন না। এরপর দ্রুত পুলিশে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তাঁরাই দমকলে খবর দেয়।
মাটিগাড়া থেকে দমকল বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের সহায়তায় ফ্যান চালিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করে কুয়ো থেকে জ্ঞানহীন অবস্থায় তিন শ্রমিক বিজয় টোপ্পো, অসিত কুজুর এবং ভানু ওঁরাওকে উদ্ধার করে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বিজয় এবং অসিতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ভানুর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। দমকল বিভাগের আধিকারিকরা জানিয়েছেন দীর্ঘদিন কুয়োটি ব্যবহার না হওয়ায় ভিতরে মিথেন গ্যাস জমা হয়েছিল প্রচুর পরিমাণে। সতর্কতা নিয়ে না নামাতেই এই বিপত্তি।