Alipurduar Teacher Molestation Case: আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের দক্ষিণ সাতালির এক সরকারি স্কুলে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার করা হল ভারপ্রাপ্ত এক শিক্ষককে। সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির চার ছাত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধেয় নিজেরাই ১০০ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানায়। এরপর কালচিনি থানার পুলিশ তড়িঘড়ি স্কুলে পৌঁছে শিক্ষককে আটক করে। পরে তাদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ালেও, বিষয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। কারণ, ওই একই স্কুলের বহু ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার শতাধিক ছাত্রী ক্লাস বয়কট করে ‘শিক্ষকের মুক্তি চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে স্কুলের বারান্দায় বসে থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের বারবার ক্লাসে ফিরতে বললেও তারা শোনেনি।
সহপাঠীদের অনেকেই জানিয়েছে, অভিযোগ করা চার ছাত্রীর গুটখা খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। কয়েকদিন আগে ওই শিক্ষক তাদের এই অভ্যাসের জন্য শাসন করেছিলেন। অভিযোগ, এরপরই শিক্ষককে ফাঁসানোর জন্য তারা এমন অভিযোগ এনেছে। অন্যদিকে, ছাত্রীরা জানিয়েছে, শিক্ষক তাদের নিজের চেম্বারে ডেকে শ্লীলতাহানি করেন।
তবে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। কারণ, ওই চার ছাত্রীর পরিবারের কেউই আগে এই বিষয়ে কিছু জানতেন না। পরে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (CWC) ফোন পেয়ে তারা হতবাক হন। CWC-র চেয়ারপার্সন অসীম বসু জানিয়েছেন, এখন ছাত্রীদের কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক প্রায় আড়াই বছর ধরে ওই স্কুলে কর্মরত। ৩১৫ জন পড়ুয়ার মধ্যে ১৩৫ জন ছাত্রী সেখানে পড়াশোনা করে এবং সকলেই হস্টেলে থাকে। অভিযোগকারীদের মধ্যে দুইজন আলিপুরদুয়ার, একজন জলপাইগুড়ি ও একজন কোচবিহার জেলার বাসিন্দা। হস্টেলের ওয়ার্ডেন জানিয়েছেন, পুরো স্কুল চত্বর সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারির মধ্যে রয়েছে। তাঁর দাবি, হস্টেলে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও অনেক স্থানীয় বাসিন্দাও ঘটনায় বিস্মিত। জেলা স্কুল পরিদর্শক রবিনা তামাং জানিয়েছেন, তাঁর কাছে এখনও কোনও অভিযোগ আসেনি। জেলা শাসক, রাজ্যের মন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কেউই ফোন ধরেননি।
পুরো ঘটনাটির তদন্ত চলছে। সত্যিই কি শিক্ষক দোষী, নাকি মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে — তা বলবে তদন্ত। তবে একদল ছাত্রী যখন অভিযোগ করছে, আর একদল শিক্ষককে নির্দোষ বলে পাশে দাঁড়াচ্ছে, তখন স্কুলে বিভাজন তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।