ঝড়ে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়িতে রাতেই রওনা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চৈত্রের কালবৈশাখীতে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। সূত্রের খবর, সেই ঝড়ে যে সব এলাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই সব এলাকায় যাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জরুরিভিত্তিতে আজ রাতেই জলপাইগুড়ির উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন। তিনি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন এবং ঘূর্ণিঝড়-দুর্গত মানুষের সঙ্গে দেখা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন সেই কারণে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জলপাইগুড়ি সফর বাতিল করা হচ্ছে। তিনি বিকেল ৫টা থেকে শিলিগুড়িতে তার পূর্ব পরিকল্পিত অভ্যন্তরীণ পার্টি মিটিংয়ে থাকবেন।
এদিন ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েই ট্যুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘রবিবার দুপুরে জলপাইগুড়ি-ময়নাগুড়ি এলাকায় ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টির খবর পেয়েছি। জীবনহানি, আহত, বাড়িঘরের ক্ষতি, গাছ-বিদ্যুতের পোল উপড়ে পড়েছে।’ জেলা ও ব্লক প্রশাসন, পুলিশ, ডিএমজি, কিআরটি এই বিপর্যয় মোকাবিলায় ময়দানে নেমেছে বলে জানান মমতা। সকলকে নিরাপদ স্থানে সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘‘জেলা প্রশাসন নিয়মানুযায়ী এবং লোকসভা ভোটের আদর্শ আচরণ বিধি অনুসরণ করে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেবে।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার ঝড়ের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। নিহতদের নাম দ্বিজেন্দ্রনারায়ণ সরকার (৫২), অনিমা রায় (৪৯), যোগেন রায় (৭০) ও সমর রায় (৬৪)। আহত হন ৫০ জনেরও বেশি।
শুধু জলপাইগুড়ি নয়, কোচবিহারের মাথাভাঙ্গাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ প্রায় আধঘণ্টাক ঝড়ে লডভন্ড হয়ে যায় কোচবিহার ২ ব্লক ও মাথাভাঙ্গা ১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা। মাথাভাঙ্গার কুর্শামারি, পচাগড় এলাকায় তিন গ্রামবাসী আহত হন। তাঁরা মাথাভাঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একাধিক বাড়ি ভেঙে যায়, উপড়ে পড়ে গাছ। অনেক গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
উত্তরবঙ্গে আগামী ২-৩ দিন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে, সেই পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। এদিন পাহাড় থেকে সমতল বেশিরভাগ জায়গাতেই সকাল থেকে আকাশ ছিল মেঘলা। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় এদিন বৃষ্টি হয়। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ জলপাইগুড়ি জেলার একাধিক জায়গায় ঝড় শুরু হয়। কিছুক্ষণের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বেশ কিছু এলাকা। গাছ চাপা পড়ে মৃত্যু হয় একজনের। জানা গিয়েছে, মৃতের বাড়ি জেলা স্কুল সংলগ্ন এলাকায়।